মিলিনিয়াম শপিং সিটির সামনের ফুটপাতে বসে ছিলাম আমি আর শুভ্র। আলো আধারীর মধ্যে বসে আমরা ব্যস্ত সিলেটকে দেখছিলাম।
ঘড়িতে তখন আটটা বেজে ৪০ মিনিট।
আমাদের সামনে এসে একটা রিক্সা থামলো। রিক্সা থেকে নামলো এক সুন্দরী মেয়ে। হুমায়ূন আহমদের ভাষায় 'মাথা আউলা করে দেয়া রুপবতী'। জীবনানন্দের ভাষায় 'রাঙা রাজকন্যা'।
আমরা তাকিয়ে থাকলাম, মেয়ে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে রিক্সা ভাড়া দিলো।
তারপরের ঘটনাগুলো ঘটে গেলো খুব দ্রুত। মেয়ে চোখ মোটা মোটা করে আমার দিকে তাকালো। আমি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললাম। মেয়েদের চোখের দিকে তাকাতে আমার অস্বস্থি হয়।
আড় চোখে দেখলাম, মেয়ে আমার দিকেই আসছে। আমি নড়েচড়ে বসলাম।
মেয়ে সত্যি সত্যি আমার সামনে এসে থামলো। আমি মাথা উচু করে তাকালাম।
মেয়ে উচ্ছ্বাসভরা গলা নিয়ে বললো, 'ও মাই গড, ও মাই গড! আপনি রা... ...'
এতটুকু বলার পর আমার সময় থমকে গেলো। সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী নামক গ্রহের ঘুর্ণন মনে হলো থেমে গেছে কিছুক্ষণের জন্য। মনে হলো পৃথিবীতে কোনো ঘড়ি নেই, কোনো সময় নেই।
মেয়ের পরের কথাগুলো কী হবে নিজে নিজেই ভেবে নিলাম... ভাবনাগুলো নিম্নরূপ -
১. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আমার বিশ্বাসই হচ্ছেনা। দেশ, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে আপনার ভাবনাগুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে আছি সেই কবে থেকে।'
২. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনাকেই আমি খুজছিলাম। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আপনি রাস্তায় বসে আছেন?'
৩. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনার মতো বুদ্ধিজীবি মানুষ মিলিনিয়ামের সামনে ফুটপাতে বসে আছে? কেমনে ম্যান? এও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?'
৪. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? ও মাই গড। আপনার সাথে দুমুঠো সেলফি তুলবো বলে হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করছি। সেলফি আপনাকে তুলতেই হবে ভাইয়া।'
৫. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনার লেখা পড়ে আমার হৃদয় হুহু করে কেঁদে উঠে। এখন হৃদয় মুছে দিন।'
... মেয়ে এসবের কিছুই বললোনা। বললো, 'ও মাই গড আপনি রাহাত না?'
প্রশ্নের উত্তর মেয়েই দিলো - 'না না, সরি। কিছু মনে করবেন না। আমি ভেবেছিলাম আপনি রাহাত। আচ্ছা, আসি।'
আমার পৃথিবী আবার থমকে গেলো। মনে হলো বসা থেকে উঠে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠি -
১. 'অবশ্যই আমি রাহাত। আমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর নাম রাহাত। আমার বাবার নাম রাহাত, দাদার নাম রাহাত। আমরা সিলেটের সম্ভ্রান্ত রাহাত বংশের লোক।'
২. 'ফাইজলামী নাকি? আপনার বন্ধুকে আপনি আমার থেকে বেশি চিনেন? অবশ্যই আমি আপনার ছোটবেলায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া বন্ধু রাহাত।'
৩. 'আমি রাহাত না হলে আজকে আপনার খবর আছে। আপনাকে মানতেই হবে আমি রাহাত। আমি পৃথিবীর একমাত্র রাহাত। আমার কোথাও কোনো শাখা নেই।'
৪. 'হতে পারি আমি রাহাত না। ওকে ফাইন... কিন্তু আজ এই মুহূর্ত থেকে আমি রাহাত। মোহাম্মদ রাহাতুদ্দিন রাহাত। নাম পালটে ফেললাম। কালকেই আইনি প্রক্রিয়া সেরে ফেলবো। এখন বলুন কী চান...'
... কিছুই বলা হলোনা। মেয়ে হন হন করে চলে গেলো।
আমি রাস্তার পাশের সোডিয়াম লাইটের দিকে তাকিয়ে পৃথিবীর সব রাহাতকে হিংসা করতে লাগলাম।
ঘড়িতে তখন আটটা বেজে ৪০ মিনিট।
আমাদের সামনে এসে একটা রিক্সা থামলো। রিক্সা থেকে নামলো এক সুন্দরী মেয়ে। হুমায়ূন আহমদের ভাষায় 'মাথা আউলা করে দেয়া রুপবতী'। জীবনানন্দের ভাষায় 'রাঙা রাজকন্যা'।
আমরা তাকিয়ে থাকলাম, মেয়ে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে রিক্সা ভাড়া দিলো।
তারপরের ঘটনাগুলো ঘটে গেলো খুব দ্রুত। মেয়ে চোখ মোটা মোটা করে আমার দিকে তাকালো। আমি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললাম। মেয়েদের চোখের দিকে তাকাতে আমার অস্বস্থি হয়।
আড় চোখে দেখলাম, মেয়ে আমার দিকেই আসছে। আমি নড়েচড়ে বসলাম।
মেয়ে সত্যি সত্যি আমার সামনে এসে থামলো। আমি মাথা উচু করে তাকালাম।
মেয়ে উচ্ছ্বাসভরা গলা নিয়ে বললো, 'ও মাই গড, ও মাই গড! আপনি রা... ...'
এতটুকু বলার পর আমার সময় থমকে গেলো। সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী নামক গ্রহের ঘুর্ণন মনে হলো থেমে গেছে কিছুক্ষণের জন্য। মনে হলো পৃথিবীতে কোনো ঘড়ি নেই, কোনো সময় নেই।
মেয়ের পরের কথাগুলো কী হবে নিজে নিজেই ভেবে নিলাম... ভাবনাগুলো নিম্নরূপ -
১. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আমার বিশ্বাসই হচ্ছেনা। দেশ, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে আপনার ভাবনাগুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে আছি সেই কবে থেকে।'
২. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনাকেই আমি খুজছিলাম। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আপনি রাস্তায় বসে আছেন?'
৩. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনার মতো বুদ্ধিজীবি মানুষ মিলিনিয়ামের সামনে ফুটপাতে বসে আছে? কেমনে ম্যান? এও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?'
৪. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? ও মাই গড। আপনার সাথে দুমুঠো সেলফি তুলবো বলে হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করছি। সেলফি আপনাকে তুলতেই হবে ভাইয়া।'
৫. 'ও মাই গড, আপনি রাজি না? আপনার লেখা পড়ে আমার হৃদয় হুহু করে কেঁদে উঠে। এখন হৃদয় মুছে দিন।'
... মেয়ে এসবের কিছুই বললোনা। বললো, 'ও মাই গড আপনি রাহাত না?'
প্রশ্নের উত্তর মেয়েই দিলো - 'না না, সরি। কিছু মনে করবেন না। আমি ভেবেছিলাম আপনি রাহাত। আচ্ছা, আসি।'
আমার পৃথিবী আবার থমকে গেলো। মনে হলো বসা থেকে উঠে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠি -
১. 'অবশ্যই আমি রাহাত। আমার চৌদ্দ গোষ্ঠীর নাম রাহাত। আমার বাবার নাম রাহাত, দাদার নাম রাহাত। আমরা সিলেটের সম্ভ্রান্ত রাহাত বংশের লোক।'
২. 'ফাইজলামী নাকি? আপনার বন্ধুকে আপনি আমার থেকে বেশি চিনেন? অবশ্যই আমি আপনার ছোটবেলায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া বন্ধু রাহাত।'
৩. 'আমি রাহাত না হলে আজকে আপনার খবর আছে। আপনাকে মানতেই হবে আমি রাহাত। আমি পৃথিবীর একমাত্র রাহাত। আমার কোথাও কোনো শাখা নেই।'
৪. 'হতে পারি আমি রাহাত না। ওকে ফাইন... কিন্তু আজ এই মুহূর্ত থেকে আমি রাহাত। মোহাম্মদ রাহাতুদ্দিন রাহাত। নাম পালটে ফেললাম। কালকেই আইনি প্রক্রিয়া সেরে ফেলবো। এখন বলুন কী চান...'
... কিছুই বলা হলোনা। মেয়ে হন হন করে চলে গেলো।
আমি রাস্তার পাশের সোডিয়াম লাইটের দিকে তাকিয়ে পৃথিবীর সব রাহাতকে হিংসা করতে লাগলাম।
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।