পর্ব এক-এর ভূমিকা-
ইসিজি কী?
ইসিজি একটি সেক্সি জিনিস। এর মধ্যে এক ধরণের মাদকতা আছে, ত্রিল আছে, অ্যাডভ্যাঞ্চার আছে।
ইসিজির পূর্ণ মানে হচ্ছে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফি। কয়েকটা আঁকাবাকা লাইন দেখে 'হৃদয়ের' অবস্থা ধরে ফেলা যাচ্ছে - এর থেকে চমৎকার বস্তু আর কী হতে পারে।
মুল লেখায় চলে যাই। লাইট ক্যামেরা একশন-
মানব দেহে কোটি কোটি কোষ আছে। একেকটা কোষ হচ্ছে একেকটা ছোটখাটো বিদ্যুতকেন্দ্র। প্রতিটা কোষে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, সেই বিদ্যুৎ এক কোষ থেকে আরেক কোষে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াটা খুব মজার। আমাদের কোষ অর্থাৎ সেলের বাইরের দিকে যে আবরণটা থাকে সেটা হলো সেলমেমব্রেন। এই মেমব্রেনে অনেকগুলো দরজা আছে। একেক দরজা একেক জিনিসের জন্য তৈরি হয়েছে। দরজাগুলোকে বলে
চ্যানেল।
সব চ্যানেল নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাবো না। আমরা ঘামাবো দুইটা চ্যানেল নিয়ে। সোডিয়াম চ্যানেল ও পটাশিয়াম চ্যানেল।
একটা সেল দুইটা অবস্থায় থাকতে পারে।
১। রেস্টিং স্টেজ, অর্থাৎ এই স্টেজে সেলটা বিশ্রাম নেবে। খুব উল্লেখযোগ্য তেমন কাজ করবেনা।
২। অ্যাকটিভ স্টেজ। অর্থাৎ এই স্টেজে সেলটা কাজ করবে।
কী কাজ করবে? যে কাজ করার কথা সে কাজ করবে। যেমন, হার্টের সেল কন্ট্রাক্ট করবে, নার্ভ সেল তথ্য আদানপ্রদান করবে।
এখন প্রশ্ন হলো, সেল এই কাজটা কীভাবে করে? একটিভ থেকে ইনেকটিভ হয় কীভাবে? আবার ইনঅ্যাকটিভ থেকেইবা অ্যাকটিভ হয় কীভাবে?
উত্তর হলো বিদ্যুতের মাধ্যমে। পালটা প্রশ্ন হলো এই বিদ্যুতটা কীভাবে উৎপন্ন হয়? এই উত্তরটাও মজার।
উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।
একটা সেল যখন রেস্টিং স্টেজে থাকে তখন তার ভেতর থেকে ৩টা পজিটিভ চার্জের সোডিয়াম আয়ন বের হয় আর দুইটা পজিটিভ চার্জের পটাশিয়াক আয়ন ঢুকে।
একটু খেয়াল করুন। তিনটা বের হচ্ছে, দুইটা ঢুকছে -তার মানে ভেতরে সবসময় একটা নেগেটিভ চার্জ বজায় থাকছে। এই চার্জটা যেকোনো পরিমান হতে পারে। যেমনঃ -৯০ মিলিভোল্ট, -৮০ মিলিভোল্ট, -৫০ মিলিভোল্ট অনে...ককিছু।
এই নেগেটিভ চার্জ নিয়ে সেলটা চুপচাপ বিশ্রাম নেয়।
এখন এই অলস সেলটার বিশ্রাম ভাঙ্গাতে হলে একে পজিটিভ বানাতে হবে। কীভাবে বানানো যায়?
যে সোডিয়াম আয়নগুলো বের হয়ে যাচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ভেতরে ঢুকিয়ে দেই ঘাড় ধরে তাহলেই তো পজিটিভ হয়ে যাবে সেল।
আমাদের বডিও একই কাজ করে। সেল থেকে সোডিয়াম বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায় হঠাৎ করে। এবং উলটা প্রচুর পরিমান সোডিয়াম ঢুকতে শুরু করে। অর্থাৎ সোডিয়াম চ্যানেলের পারমিয়েবিলিটি বেড়ে যায়। কতোটা? কিছুটা অবিশ্বাস্য শুনালেও সত্য পারমিয়েবিলিটি বাড়ে যায় ৫০ থেকে ৫০০০ গুন। অন্যদিকে যে দুইটা পটাশিয়াম আয়ন ঢুকছিলো সেগুলো বের হতে থাকে।
এখন সেলের ভেতরে প্রচুর পজিটিভ চার্জ যুক্ত সোডিয়াম ঢুকে যাওয়ায় সেলের ভেতরের নেগেটিভিটি কমে যায়। উদাহারণসরূপ - যে সেলের চার্জ আগে ছিলো -৯০ মিলিভোল্ট সেটা দেখা যায় হয়ে গেছে -৫০ মিলিভোল্ট। এটাকে বলে ডিপোলারাইজেশন।
একট সহজ ছবির মাধ্যমে ব্যাপারটা দেখার চেষ্টা করা যাক -
এই যে কারেন্ট চ্যাঞ্জ হওয়ার প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়াটাই মুলত সেলটাকে একটিভ করে দেয়। এই সেল তারপর তার আশেপাশের সেলকে কারেন্ট দেয় তারপর একসাথে নিজেদের কাজ করে।
হার্টের সেল হলে কন্ট্রাক্ট করে, পেনক্রিয়াসের সেল হলে ইনসুলিন রিলিজ করে। (ব্যাপারটা অনেকটা এরকম। একই কারেন্ট টিউবলাইটে গেলে আলো দিচ্ছে, ফ্যানে গেলে বাতাস দিচ্ছে।)
আমরা ইসিজিতে যেটা দেখি সেটা হচ্ছে, এই কারেন্টটা ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে কিনা, ঠিকমতো একযায়গা থেকে আরেক যায়গায় যাচ্ছে কিনা, আশেপাশের সেলকে কারেন্ট দিতে পারছে কিনা, কারেন্ট বেশি হয়ে যাচ্ছে কিনা, কম হয়ে যাচ্ছে কিনা, কারেন্ট উলটাপালটা ভাবে উৎপন্ন হচ্ছে কিনা... ইত্যাদি ইত্যাদি।
ইসিজি কী?
ইসিজি একটি সেক্সি জিনিস। এর মধ্যে এক ধরণের মাদকতা আছে, ত্রিল আছে, অ্যাডভ্যাঞ্চার আছে।
ইসিজির পূর্ণ মানে হচ্ছে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফি। কয়েকটা আঁকাবাকা লাইন দেখে 'হৃদয়ের' অবস্থা ধরে ফেলা যাচ্ছে - এর থেকে চমৎকার বস্তু আর কী হতে পারে।
মুল লেখায় চলে যাই। লাইট ক্যামেরা একশন-
মানব দেহে কোটি কোটি কোষ আছে। একেকটা কোষ হচ্ছে একেকটা ছোটখাটো বিদ্যুতকেন্দ্র। প্রতিটা কোষে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, সেই বিদ্যুৎ এক কোষ থেকে আরেক কোষে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াটা খুব মজার। আমাদের কোষ অর্থাৎ সেলের বাইরের দিকে যে আবরণটা থাকে সেটা হলো সেলমেমব্রেন। এই মেমব্রেনে অনেকগুলো দরজা আছে। একেক দরজা একেক জিনিসের জন্য তৈরি হয়েছে। দরজাগুলোকে বলে
চ্যানেল।
সব চ্যানেল নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাবো না। আমরা ঘামাবো দুইটা চ্যানেল নিয়ে। সোডিয়াম চ্যানেল ও পটাশিয়াম চ্যানেল।
একটা সেল দুইটা অবস্থায় থাকতে পারে।
১। রেস্টিং স্টেজ, অর্থাৎ এই স্টেজে সেলটা বিশ্রাম নেবে। খুব উল্লেখযোগ্য তেমন কাজ করবেনা।
২। অ্যাকটিভ স্টেজ। অর্থাৎ এই স্টেজে সেলটা কাজ করবে।
কী কাজ করবে? যে কাজ করার কথা সে কাজ করবে। যেমন, হার্টের সেল কন্ট্রাক্ট করবে, নার্ভ সেল তথ্য আদানপ্রদান করবে।
এখন প্রশ্ন হলো, সেল এই কাজটা কীভাবে করে? একটিভ থেকে ইনেকটিভ হয় কীভাবে? আবার ইনঅ্যাকটিভ থেকেইবা অ্যাকটিভ হয় কীভাবে?
উত্তর হলো বিদ্যুতের মাধ্যমে। পালটা প্রশ্ন হলো এই বিদ্যুতটা কীভাবে উৎপন্ন হয়? এই উত্তরটাও মজার।
উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।
একটা সেল যখন রেস্টিং স্টেজে থাকে তখন তার ভেতর থেকে ৩টা পজিটিভ চার্জের সোডিয়াম আয়ন বের হয় আর দুইটা পজিটিভ চার্জের পটাশিয়াক আয়ন ঢুকে।
একটু খেয়াল করুন। তিনটা বের হচ্ছে, দুইটা ঢুকছে -তার মানে ভেতরে সবসময় একটা নেগেটিভ চার্জ বজায় থাকছে। এই চার্জটা যেকোনো পরিমান হতে পারে। যেমনঃ -৯০ মিলিভোল্ট, -৮০ মিলিভোল্ট, -৫০ মিলিভোল্ট অনে...ককিছু।
এই নেগেটিভ চার্জ নিয়ে সেলটা চুপচাপ বিশ্রাম নেয়।
এখন এই অলস সেলটার বিশ্রাম ভাঙ্গাতে হলে একে পজিটিভ বানাতে হবে। কীভাবে বানানো যায়?
যে সোডিয়াম আয়নগুলো বের হয়ে যাচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ভেতরে ঢুকিয়ে দেই ঘাড় ধরে তাহলেই তো পজিটিভ হয়ে যাবে সেল।
আমাদের বডিও একই কাজ করে। সেল থেকে সোডিয়াম বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায় হঠাৎ করে। এবং উলটা প্রচুর পরিমান সোডিয়াম ঢুকতে শুরু করে। অর্থাৎ সোডিয়াম চ্যানেলের পারমিয়েবিলিটি বেড়ে যায়। কতোটা? কিছুটা অবিশ্বাস্য শুনালেও সত্য পারমিয়েবিলিটি বাড়ে যায় ৫০ থেকে ৫০০০ গুন। অন্যদিকে যে দুইটা পটাশিয়াম আয়ন ঢুকছিলো সেগুলো বের হতে থাকে।
এখন সেলের ভেতরে প্রচুর পজিটিভ চার্জ যুক্ত সোডিয়াম ঢুকে যাওয়ায় সেলের ভেতরের নেগেটিভিটি কমে যায়। উদাহারণসরূপ - যে সেলের চার্জ আগে ছিলো -৯০ মিলিভোল্ট সেটা দেখা যায় হয়ে গেছে -৫০ মিলিভোল্ট। এটাকে বলে ডিপোলারাইজেশন।
একট সহজ ছবির মাধ্যমে ব্যাপারটা দেখার চেষ্টা করা যাক -
এই যে কারেন্ট চ্যাঞ্জ হওয়ার প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়াটাই মুলত সেলটাকে একটিভ করে দেয়। এই সেল তারপর তার আশেপাশের সেলকে কারেন্ট দেয় তারপর একসাথে নিজেদের কাজ করে।
হার্টের সেল হলে কন্ট্রাক্ট করে, পেনক্রিয়াসের সেল হলে ইনসুলিন রিলিজ করে। (ব্যাপারটা অনেকটা এরকম। একই কারেন্ট টিউবলাইটে গেলে আলো দিচ্ছে, ফ্যানে গেলে বাতাস দিচ্ছে।)
আমরা ইসিজিতে যেটা দেখি সেটা হচ্ছে, এই কারেন্টটা ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে কিনা, ঠিকমতো একযায়গা থেকে আরেক যায়গায় যাচ্ছে কিনা, আশেপাশের সেলকে কারেন্ট দিতে পারছে কিনা, কারেন্ট বেশি হয়ে যাচ্ছে কিনা, কম হয়ে যাচ্ছে কিনা, কারেন্ট উলটাপালটা ভাবে উৎপন্ন হচ্ছে কিনা... ইত্যাদি ইত্যাদি।
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।