তিনজন "তরুন ব্লগার" নিয়ে "দৈনিক যুগান্তর"এর "উনিশ-কুড়ি" পাতায় ছাপা হওয়া একটি ফিচার। যুগান্তর আমার নামের পাশে "জনপ্রিয়" "সাবলীল" "সুদৃড়" ইত্যাদি বিশেষণ বসিয়েছে। যার ফলে আমি যথেষ্ট বিব্রত।
যাই হোক, তারপরেও ফিচারটির ব্যাক রেখে দিলাম এখান। :)
কৈশর পেরিয়েছে খুব বেশীদিন হয়নি তাদের। স্বাধীন মত প্রকাশের গুরত্বপূর্ণ মাধ্যম ব্লগে এরই মাঝে বেশ ক'জন প্রতিভাবান ব্লগার লেখনীশক্তি দিয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে নিয়ে বিশেষ আয়োজন:
আলিম আল রাজি : আলিম আল রাজির ব্লগিংয়ের বয়স খুব বেশি দিন হয়নি। মাত্র দেড় বছর। এর মধ্যেই তিনি নিজের অবস্থানটি সুদৃঢ় করে নিয়েছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধু তার বৈচিত্র্যপূর্ণ লেখার কারণে।
একটা কঠিন বিষয়কেও সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তিনি, যা সহজেই অন্যদের ভালো লাগাকে স্পর্শ করে। আর ব্লগ সম্পর্কে নিজের ভালো লাগার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্লগে কিছু একটা লিখলে সঙ্গে সঙ্গে রেসপন্স পাওয়া যায়। যা অত্যন্ত ভালো লাগার মতো একটা ব্যাপার। অন্য কোন মাধ্যমে এত দ্রুত রেসপন্স পাওয়া যায় কি না আমার জানা নেই। আরেকটা বড় ব্যাপার হল স্বাধীনতা। ব্লগে স্বাধীনভাবে লেখা যায়, স্বাধীন মত প্রকাশ করা যায়। যে যা বলতে চান, একদম সরাসরি বলতে পারেন। অথচ অন্যান্য ক্ষেত্রে বললে কথাটা হয়তো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলতে হবে। মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে ব্লগের মিল কিংবা অমিল সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজি বলেন, অনেক ব্লগার আছেন, যারা সাহিত্যিক হিসেবে এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন। তার মানে ব্লগের সঙ্গে সাহিত্যের মূলধারার একটা সম্পর্ক অবশ্যই আছে। তবে এটাও ঠিক যে ব্লগে যখন কেউ একটা লেখা লেখেন, তখন লেখাটা কতটুকু সাহিত্য হয়ে উঠল, এটা বোধহয় খুব কম ব্লগারই ভাবেন। বরং ভাবেন নিজের কথাগুলো কতটা নিজের মতো করে প্রকাশ করা গেল।
সাদমান সাদেক : বিভিন্ন মাধ্যমে মন খারাপ করা খবরগুলো শুনতে শুনতে তরুণরা ক্লান্ত। এই ক্লান্তি থেকে একটু হলেও রেহাই দিতে সবাইকে সুখবর শোনাতে চান সাদমান সাদেক। এই চাওয়া থেকেই সূচনা করেন নিউজ ব্লগিংয়ের। এখানে প্রতিদিনের সুখবরগুলো অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে আপলোড করা হয়। সাদমান ব্লগের সঙ্গে জড়িত অনেক বছর ধরে। চার-পাঁচ বছর তো হবেই। ব্লগে স্বাধীন মত প্রকাশের বিষয়টিই তাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে। এক কথায় বলতে গেলে এখানে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করা যায় বলেই তিনি এর সঙ্গে এত দিন ধরে আছেন। ব্লগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফেসবুকে তিনি একটা পেজও খুলেছেন। পেজটির নাম ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো’। এখানে সাহিত্যচর্চা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসচর্চা হয়। সাদমান মনে করেন ব্লগের সঙ্গে সাহিত্যের মূলধারার প্রত্যক্ষ কোন সম্পর্ক না থাকলেও কেউ চাইলে এখান থেকে নিজেকে সাহিত্যিক হিসেবে গড়ে নিতে পারেন। কারণ এখানে একটা ভালো লেখার রেসপন্স প্রচুর। সবচেয়ে বড় কথা হল, সম্পর্কের খাতিরে এখানে কেউ একটা খারাপ লেখাকে ভালো বলার চেষ্টা করেন না। খারাপকে খারাপই বলেন, ভালোকে ভালো।
নিশম সরকার : নিশম সরকার ব্লগিং করছেন প্রায় দুই বছর ধরে। এরই মধ্যে ব্লগার হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। লেখায় তিনি জোর দেন মূলত সমসাময়িক বিষয়ের ওপর। আর সেই বিষয় কতটা সর্বজনীনভাবে উপস্থাপন করা যায়, সেই চেষ্টাই করেন তিনি। তার চেষ্টা সফল হয় যখন তিনি দেখেন অন্যরা সেটি ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। নিশম বলেন, লেখালেখি এবং মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লগাররা যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করেন, অন্য কেউ তা করেন না। ব্লগে এই স্বাধীনতাটা আছে বলেই ব্লগ এত জমজমাট। রাত জেগে জেগে ব্লগিং করার অনুপ্রেরণাও মূলত এটাই।
নিশম মনে করেন মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে ব্লগের অবশ্যই সম্পর্ক আছে। সেটা প্রত্যক্ষ সম্পর্কও হতে পারে, পরোক্ষও হতে পারে। কারণ কারও একটি কথা, কারও একটি লেখা তখনই অন্যকে স্পর্শ করে, যখন সেখানে সাহিত্যের উপাদান থাকে। ব্লগাররা একটা বিষয়কে এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাদের মধ্যে সাহিত্যবোধ আছে বলেই।
যুগান্তরঃ ৯/০৩/১০১২
যাই হোক, তারপরেও ফিচারটির ব্যাক রেখে দিলাম এখান। :)
কৈশর পেরিয়েছে খুব বেশীদিন হয়নি তাদের। স্বাধীন মত প্রকাশের গুরত্বপূর্ণ মাধ্যম ব্লগে এরই মাঝে বেশ ক'জন প্রতিভাবান ব্লগার লেখনীশক্তি দিয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে নিয়ে বিশেষ আয়োজন:
আলিম আল রাজি : আলিম আল রাজির ব্লগিংয়ের বয়স খুব বেশি দিন হয়নি। মাত্র দেড় বছর। এর মধ্যেই তিনি নিজের অবস্থানটি সুদৃঢ় করে নিয়েছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধু তার বৈচিত্র্যপূর্ণ লেখার কারণে।
একটা কঠিন বিষয়কেও সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তিনি, যা সহজেই অন্যদের ভালো লাগাকে স্পর্শ করে। আর ব্লগ সম্পর্কে নিজের ভালো লাগার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্লগে কিছু একটা লিখলে সঙ্গে সঙ্গে রেসপন্স পাওয়া যায়। যা অত্যন্ত ভালো লাগার মতো একটা ব্যাপার। অন্য কোন মাধ্যমে এত দ্রুত রেসপন্স পাওয়া যায় কি না আমার জানা নেই। আরেকটা বড় ব্যাপার হল স্বাধীনতা। ব্লগে স্বাধীনভাবে লেখা যায়, স্বাধীন মত প্রকাশ করা যায়। যে যা বলতে চান, একদম সরাসরি বলতে পারেন। অথচ অন্যান্য ক্ষেত্রে বললে কথাটা হয়তো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলতে হবে। মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে ব্লগের মিল কিংবা অমিল সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজি বলেন, অনেক ব্লগার আছেন, যারা সাহিত্যিক হিসেবে এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছেন। তার মানে ব্লগের সঙ্গে সাহিত্যের মূলধারার একটা সম্পর্ক অবশ্যই আছে। তবে এটাও ঠিক যে ব্লগে যখন কেউ একটা লেখা লেখেন, তখন লেখাটা কতটুকু সাহিত্য হয়ে উঠল, এটা বোধহয় খুব কম ব্লগারই ভাবেন। বরং ভাবেন নিজের কথাগুলো কতটা নিজের মতো করে প্রকাশ করা গেল।
সাদমান সাদেক : বিভিন্ন মাধ্যমে মন খারাপ করা খবরগুলো শুনতে শুনতে তরুণরা ক্লান্ত। এই ক্লান্তি থেকে একটু হলেও রেহাই দিতে সবাইকে সুখবর শোনাতে চান সাদমান সাদেক। এই চাওয়া থেকেই সূচনা করেন নিউজ ব্লগিংয়ের। এখানে প্রতিদিনের সুখবরগুলো অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে আপলোড করা হয়। সাদমান ব্লগের সঙ্গে জড়িত অনেক বছর ধরে। চার-পাঁচ বছর তো হবেই। ব্লগে স্বাধীন মত প্রকাশের বিষয়টিই তাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে। এক কথায় বলতে গেলে এখানে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করা যায় বলেই তিনি এর সঙ্গে এত দিন ধরে আছেন। ব্লগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফেসবুকে তিনি একটা পেজও খুলেছেন। পেজটির নাম ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনো’। এখানে সাহিত্যচর্চা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসচর্চা হয়। সাদমান মনে করেন ব্লগের সঙ্গে সাহিত্যের মূলধারার প্রত্যক্ষ কোন সম্পর্ক না থাকলেও কেউ চাইলে এখান থেকে নিজেকে সাহিত্যিক হিসেবে গড়ে নিতে পারেন। কারণ এখানে একটা ভালো লেখার রেসপন্স প্রচুর। সবচেয়ে বড় কথা হল, সম্পর্কের খাতিরে এখানে কেউ একটা খারাপ লেখাকে ভালো বলার চেষ্টা করেন না। খারাপকে খারাপই বলেন, ভালোকে ভালো।
নিশম সরকার : নিশম সরকার ব্লগিং করছেন প্রায় দুই বছর ধরে। এরই মধ্যে ব্লগার হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন। লেখায় তিনি জোর দেন মূলত সমসাময়িক বিষয়ের ওপর। আর সেই বিষয় কতটা সর্বজনীনভাবে উপস্থাপন করা যায়, সেই চেষ্টাই করেন তিনি। তার চেষ্টা সফল হয় যখন তিনি দেখেন অন্যরা সেটি ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। নিশম বলেন, লেখালেখি এবং মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্লগাররা যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করেন, অন্য কেউ তা করেন না। ব্লগে এই স্বাধীনতাটা আছে বলেই ব্লগ এত জমজমাট। রাত জেগে জেগে ব্লগিং করার অনুপ্রেরণাও মূলত এটাই।
নিশম মনে করেন মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে ব্লগের অবশ্যই সম্পর্ক আছে। সেটা প্রত্যক্ষ সম্পর্কও হতে পারে, পরোক্ষও হতে পারে। কারণ কারও একটি কথা, কারও একটি লেখা তখনই অন্যকে স্পর্শ করে, যখন সেখানে সাহিত্যের উপাদান থাকে। ব্লগাররা একটা বিষয়কে এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাদের মধ্যে সাহিত্যবোধ আছে বলেই।
যুগান্তরঃ ৯/০৩/১০১২