চিঠি-১
প্রিয় বিভাগীয় সম্পাদক, রস+আলো,
পত্রের প্রথমেই আমার ভালোবাসা নেবেন। আশা করি ভালোই আছেন। কিন্তু আমি ভালো নেই। আজ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনার কাছে লিখতে বসেছি।
পর সমাচার এই হলো, আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে কার্টুন চ্যানেলের কার্টুনগুলো অত্যন্ত চমৎকারভাবে নড়াচড়া করে। কী সুন্দর টম আর জেরি সারা দিন দৌড়াদৌড়ি করে! কিন্তু রস+আলোর কার্টুনগুলো দৌড়াদৌড়ি তো দূরের কথা, নড়াচড়াই করতে পারে না।
আপনি কি ভেবেছেন, আমরা এর কারণ জানি না? আমরা সব জানি, সব বুঝি। আমাদের এত বোকা ভাববেন না। আপনার ষড়যন্ত্রের কারণেই সুন্দর কার্টুনগুলো নড়াচড়া করতে পারে না।
তাই আমরা দৃঢ়কণ্ঠে জানিয়ে দিচ্ছি, ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। হাংকি-পাংকি করবেন না। না হলে আপনার নড়াচড়াও বন্ধ করে দেওয়া হবে। অনতিবিলম্বে রস+আলোর কার্টুনগুলোর নড়াচড়ার ব্যবস্থা করুন।
আজ আর বিশেষ কী—ভালো থাকুন।
ইতি
জনৈক কার্টুনপ্রেমী পাঠক
বয়স: ১০।
চিঠি-২
প্রিয় প্রথম আলো সম্পাদক,
সালাম নেবেন। কেমন আছেন? আশা করি ভালো। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকুন, এটাই আমার কামনা। আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার জানাতেই হাতে কলম তুলে নিলাম। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে আমি দেশ, জাতি, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নিয়মিত চিন্তাভাবনা করে থাকি। সম্প্রতি চিন্তা করতে করতে একটা জিনিস আবিষ্কার করেছি।
দেখুন, সপ্তাহে পুরো সাত দিন প্রথম আলো বের হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ব্যাপার। আসলে প্রতিদিন প্রথম আলো বের হওয়ার কোনো দরকারই নেই। অন্যদিকে দেখুন, রস+আলো সপ্তাহে বের হয় মাত্র এক দিন। কোনো মানে হয়? আমি চাই, সপ্তাহে সাত দিনই রস+আলো বের হোক। একদিন না হয় ফ্রি হিসেবে সঙ্গে প্রথম আলো দেওয়া যেতে পারে।
আমি জানি, আপনিও আমার মতো বিচক্ষণ ব্যক্তি। আশা করি, আমার সঙ্গে একমত হয়ে সপ্তাহে সাত দিন রস+আলো আর এক দিন প্রথম আলো বের করে দেশ ও জাতিকে কৃতজ্ঞ করবেন।
আজ আর নয়। পরে একদিন না হয় অন্য কোনো জরুরি আবদার নিয়ে হাজির হব। এখন একটু বিজি।
ভালো থাকুন।
ইতি
জনৈক পাঠিকা
বয়স: ৯।
চিঠি-৩
প্রিয় রস+আলো সম্পাদক,
নিশ্চয়ই ভালো আছেন। ভালো তো থাকবেনই। কারণ, আছেন তো মৌজে। আপনি আসলে লোক ভালো না। দেশের আপামর বাচ্চাকাচ্চা আপনার ওপর মহা খ্যাপা। হবেই বা না কেন? হওয়ার অনেক কারণ আছে।
আমরা খেয়াল করে দেখেছি, রস+আলোর বিভিন্ন পাতায় নানা রকম চকলেট, চিপস ইত্যাদির বিজ্ঞাপন থাকে। এসব বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জিভে জল এসে যায়। আমাদের প্রশ্ন হলো অন্য জায়গায়। চানাচুর-চিপসের সত্যিকারের প্যাকেটগুলো কোথায় যায়? কেন শুধু ছবি ছাপা হয়? হোয়াই? হোয়াই দিস ইজ ক্যালিভারি ডি?
আমাদের ধারণা, চানাচুর-চিপসের আসল প্যাকেটগুলো মেরে দিয়ে আপনি আমাদের কেবল ছবিগুলো দিচ্ছেন।
আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আপনি লাইনে আসুন। টালটিবাজি করবেন না। আসল মাল সাপ্লাই দিন।
ইতি
চানাচুর-চিপসপ্রেমী শিশুসমাজ।
চিঠি-৪
মাননীয় প্রধান শিক্ষক,
আমরা আপনার স্কুলের অত্যন্ত মনোযোগী ছাত্রছাত্রী। আমরা বেশ মনোযোগের সঙ্গে খেলাধুলা ও দুষ্টুমি করে থাকি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে পড়ালেখার চাপে আমাদের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত।
এমতাবস্থায় আমাদের পাঠ্যতালিকায় দরকার নতুন এবং অন্য রকম কোনো বিষয়, যা আমাদের দিতে পারে অনাবিল আনন্দ। চিন্তা করে দেখলাম, রস+আলোই হতে পারে সেই বিষয়।
আপনি জানেন যে পড়ালেখার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাও অত্যন্ত জরুরি। রস+আলো পড়লে আমরা বিনোদন পাব। এতে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে বলে আমাদের ধারণা।
তা ছাড়া রস+আলো পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে আমাদের আর লুকিয়ে লুকিয়ে বইয়ের চিপায় ঢুকিয়ে রস+আলো পড়তে হবে না। এতে করে মা-বাবার কাছে ঝাড়ি খাওয়ার চান্সও তখন কমে যাবে।
তাই আশা করি, আমাদের এই সমস্যা আপনি অতিদ্রুত আমলে আনবেন এবং সমস্যা নিরসনে আশু ব্যবস্থা নেবেন।
বিনীত
আপনার স্কুলের লক্ষ্মীসোনা চাদের কণা ছাত্রছাত্রীরা।
রস+আলো-তে প্রকাশিত
প্রিয় বিভাগীয় সম্পাদক, রস+আলো,
পত্রের প্রথমেই আমার ভালোবাসা নেবেন। আশা করি ভালোই আছেন। কিন্তু আমি ভালো নেই। আজ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনার কাছে লিখতে বসেছি।
পর সমাচার এই হলো, আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে কার্টুন চ্যানেলের কার্টুনগুলো অত্যন্ত চমৎকারভাবে নড়াচড়া করে। কী সুন্দর টম আর জেরি সারা দিন দৌড়াদৌড়ি করে! কিন্তু রস+আলোর কার্টুনগুলো দৌড়াদৌড়ি তো দূরের কথা, নড়াচড়াই করতে পারে না।
আপনি কি ভেবেছেন, আমরা এর কারণ জানি না? আমরা সব জানি, সব বুঝি। আমাদের এত বোকা ভাববেন না। আপনার ষড়যন্ত্রের কারণেই সুন্দর কার্টুনগুলো নড়াচড়া করতে পারে না।
তাই আমরা দৃঢ়কণ্ঠে জানিয়ে দিচ্ছি, ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। হাংকি-পাংকি করবেন না। না হলে আপনার নড়াচড়াও বন্ধ করে দেওয়া হবে। অনতিবিলম্বে রস+আলোর কার্টুনগুলোর নড়াচড়ার ব্যবস্থা করুন।
আজ আর বিশেষ কী—ভালো থাকুন।
ইতি
জনৈক কার্টুনপ্রেমী পাঠক
বয়স: ১০।
চিঠি-২
প্রিয় প্রথম আলো সম্পাদক,
সালাম নেবেন। কেমন আছেন? আশা করি ভালো। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকুন, এটাই আমার কামনা। আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার জানাতেই হাতে কলম তুলে নিলাম। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে আমি দেশ, জাতি, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নিয়মিত চিন্তাভাবনা করে থাকি। সম্প্রতি চিন্তা করতে করতে একটা জিনিস আবিষ্কার করেছি।
দেখুন, সপ্তাহে পুরো সাত দিন প্রথম আলো বের হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ব্যাপার। আসলে প্রতিদিন প্রথম আলো বের হওয়ার কোনো দরকারই নেই। অন্যদিকে দেখুন, রস+আলো সপ্তাহে বের হয় মাত্র এক দিন। কোনো মানে হয়? আমি চাই, সপ্তাহে সাত দিনই রস+আলো বের হোক। একদিন না হয় ফ্রি হিসেবে সঙ্গে প্রথম আলো দেওয়া যেতে পারে।
আমি জানি, আপনিও আমার মতো বিচক্ষণ ব্যক্তি। আশা করি, আমার সঙ্গে একমত হয়ে সপ্তাহে সাত দিন রস+আলো আর এক দিন প্রথম আলো বের করে দেশ ও জাতিকে কৃতজ্ঞ করবেন।
আজ আর নয়। পরে একদিন না হয় অন্য কোনো জরুরি আবদার নিয়ে হাজির হব। এখন একটু বিজি।
ভালো থাকুন।
ইতি
জনৈক পাঠিকা
বয়স: ৯।
চিঠি-৩
প্রিয় রস+আলো সম্পাদক,
নিশ্চয়ই ভালো আছেন। ভালো তো থাকবেনই। কারণ, আছেন তো মৌজে। আপনি আসলে লোক ভালো না। দেশের আপামর বাচ্চাকাচ্চা আপনার ওপর মহা খ্যাপা। হবেই বা না কেন? হওয়ার অনেক কারণ আছে।
আমরা খেয়াল করে দেখেছি, রস+আলোর বিভিন্ন পাতায় নানা রকম চকলেট, চিপস ইত্যাদির বিজ্ঞাপন থাকে। এসব বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের জিভে জল এসে যায়। আমাদের প্রশ্ন হলো অন্য জায়গায়। চানাচুর-চিপসের সত্যিকারের প্যাকেটগুলো কোথায় যায়? কেন শুধু ছবি ছাপা হয়? হোয়াই? হোয়াই দিস ইজ ক্যালিভারি ডি?
আমাদের ধারণা, চানাচুর-চিপসের আসল প্যাকেটগুলো মেরে দিয়ে আপনি আমাদের কেবল ছবিগুলো দিচ্ছেন।
আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আপনি লাইনে আসুন। টালটিবাজি করবেন না। আসল মাল সাপ্লাই দিন।
ইতি
চানাচুর-চিপসপ্রেমী শিশুসমাজ।
চিঠি-৪
মাননীয় প্রধান শিক্ষক,
আমরা আপনার স্কুলের অত্যন্ত মনোযোগী ছাত্রছাত্রী। আমরা বেশ মনোযোগের সঙ্গে খেলাধুলা ও দুষ্টুমি করে থাকি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে পড়ালেখার চাপে আমাদের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত।
এমতাবস্থায় আমাদের পাঠ্যতালিকায় দরকার নতুন এবং অন্য রকম কোনো বিষয়, যা আমাদের দিতে পারে অনাবিল আনন্দ। চিন্তা করে দেখলাম, রস+আলোই হতে পারে সেই বিষয়।
আপনি জানেন যে পড়ালেখার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাও অত্যন্ত জরুরি। রস+আলো পড়লে আমরা বিনোদন পাব। এতে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে বলে আমাদের ধারণা।
তা ছাড়া রস+আলো পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলে আমাদের আর লুকিয়ে লুকিয়ে বইয়ের চিপায় ঢুকিয়ে রস+আলো পড়তে হবে না। এতে করে মা-বাবার কাছে ঝাড়ি খাওয়ার চান্সও তখন কমে যাবে।
তাই আশা করি, আমাদের এই সমস্যা আপনি অতিদ্রুত আমলে আনবেন এবং সমস্যা নিরসনে আশু ব্যবস্থা নেবেন।
বিনীত
আপনার স্কুলের লক্ষ্মীসোনা চাদের কণা ছাত্রছাত্রীরা।
রস+আলো-তে প্রকাশিত