মোবাইলের রিংটোন শুনে হুড়মুড় করে ঘুম থেকে উঠলেন তিনকোনা। ঘুম ঘুম চোখে মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকালেন, লেখা আছে MOGBAJAR-1. লেখা দেখে মুহূর্তেই চোখ থেকে ঘুম উবে গেলো। ফোন ধরলেন,
- হুজুর, আসসালাম।
- নালায়েক! আগে "আসসালাম" বলবা। তার পর বলবা "হুজুর"।
- স্যরি হুজুর।
- ওরে নাখান্দা! "স্যরি" কি রে! ইহুদি নাসারাদের বুলি মুখে কেনো। যাক! আসল কথায় আসি। কোন আপডেট আছে?
- কিসের আপডেট হুজুর?
- তোমারে না বললাম নতুন পোস্ট দিতে! পোস্টের কি হলো?
- দিয়ে দিবো হুজুর। এখনি দিয়ে দিবো।
- ভুলে যেওনা তিনকোনা, আমাদের এখন বড় দুর্দিন। ব্লগ সেক্টরের দায়ীত্বে আছো তুমি। এখন তুমিই যদি তোমার কর্তব্যে হেলেফেলা করো সেটা তো আমাদের জন্য বরদাস্ত করা কঠিন হয়ে যাবে।
হুজুরের কন্ঠে বিরক্তির আভাশ। একটু ভয় পেয়ে গেলেন তিনকোনা। ভয়ে ভয়ে জবাব দিলেন,
- আজকের পারফর্মেন্স ভালো হবে হুজুর। নিশ্চিত থাকেন।
তিনকোনা ফোন রাখলেন। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। বড় হুজুরের ভাবসাব তো বেশি সুবিধার মনে হলো না। এখন যদি চাকরিটা চলে যায় তাহলে তো পথে বসতে হবে। তিনকোনা আতংকে আর ভাবতে পারলেন না। তিনি মনে মনে একবার "ইয়া নাফসি" জপলেন।
তারপর ঝটপট বসে পড়লেন পিসির সামনে। ড্রয়ার থেকে "নিকখাতা" বের করলেন। এই নিকখাতাটাই তার সম্বল। তার প্রায় হাজার খানেক নিকের প্রতিটির পাসওয়ার্ড ও হালকা বিবরণ আছে এই খাতায়। উদাহারণ দেওয়া যাকঃ
নিকের নামঃ অমুক
বয়সঃ ২৫/২৬
রাজনৈতিক দর্শনঃ বি এন পি-র বেশে ছাগু।
সম্প্রতি কেচাল লেগেছেঃ তমুকের সাথে।
নিকের নামঃ তমুক
বয়সঃ ৩০
রাজনৈতিক দর্শনঃ সুশীল ছাগু(পিছলা ছাগু)
তিনকোনা এই নিকবইটি রেগুলার ঘষামাজা করেন। মুছেন। এডিট করেন।
যাই হোক, তিনকোনা সাহেব এবার সামু অপেন করলেন। একটা বিশেষ নিক থেকে লগইন করলেন। আজকে একটা ফাটাফাটি পোস্ট লিখতে হবে। এই পোস্টের বদৌলতে যদি ঈদবোনাসটা একটু তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়!
পোস্ট লেখা শুরু করলেন। পোস্টের বিষয় বস্তু আগেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে মগবাজার থেকে। তিনি সেটাকে একটু এডিট করে একটা পোস্ট লিখলেন।
জাতীয় জীবনে দূর্যোগের ঘনঘটাঃ প্রয়োজন তরুন ইসলামি নেতৃত্ব। --- শিরোনামের দিকে একবার ভালো করে তাকালেন। চমৎকার সুশিলিয় শিরোনাম হয়েছে। নিজেই নিজেকে জাঝা দিলেন একবার।
এবার তিনি আস্তে আস্তে বিস্তারিতটাও লিখে ফেললেন।
প্রথমেই শুরু করলেন ভারত প্রসঙ্গ দিয়ে। দেশ কিভাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, কিভাবে দেশের বারটা বেজে যাচ্ছে এই বিষয়ে হেনতেন করে একটা স্টার্টিং লিখলেন।
এরপর আসলেন ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে। এটা নিয়েও একটা জ্ঞানগর্ভ বয়ান দিলেন।
এরপর তিনি আসলেন মুল পয়েন্টে। এই পয়েন্টটা বেশ গুরত্বপূর্ণ। তাই তিনি মাথা আরেকটু ঠান্ডা করে লেখা শুরু করলেন, দেশ থেকে আজ ইসলাম খেদানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রখ্যাত ওয়াজি, আমির, দ্বিনী পন্ডিত সহ অনককেই জ্বেলে ভরে রাখা হয়েছে। তিনকোনা এই পরিস্থিতির হালকা একটা প্রতিবাদ জানালেন। তারপর লিখলেন দেশে এখন ইসলামি শাষন জরুরি। কৌশলে বুঝিয়ে দিলেন, এই জন্য জামাতে ইসলামির আর কোন বিকল্প নেই। এই টাইপের হাবিজাবি দিয়ে তিনি লেখা শেষ করে আনলেন। এবং আস্তে করে পোস্টটি প্রকাশ করে দিলেন।
তিনকোনা একটা তৃপ্তির হাসি হাসলেন। যাক পোস্ট করা গেলো। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, একটু টয়লেট থেকে এসে বিভিন্ন নিক থেকে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। এবং পোস্ট লেখকের সাথে সহমত জানাতে হবে। কেউ উলটাপালটা করলেই তাকে উত্তম হারে ধোলাই দিতে হবে।
এই প্রক্রিয়াটাকে তিনি নাম দিয়েছেন, "ব্লগ ফিক্সিং"। যদিও মগবাজারের হুজুরেরা এটাকে অদ্ভুত একটা উর্দু নামে ডাকেন।
২।
টয়লেট থেকে এসেই ঝাপিয়ে পড়লেন তিনকোনা।
দেখলেন খেলা জমে গেছে। মানুষ এসে গদাম দেওয়া শুরু করেছে। এখনি একশনে যাওয়ার সময়। তিনি কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই একশনে চলে গেলেন।
বেশ কিছু কমেন্ট দেওয়ার পরে খেয়াল করলেন ব্যাপারটা।
তিনি লগ আউট করেননি! ও মাই গড! লগ আউট না করেই তিনি এত কমেন্ট দিয়ে গেছেন। তারমানে দাড়াচ্ছে তিনি এতক্ষন নিজেই নিজের সাথে সহমত জানিয়েছেন, জাঝা দিয়েছেন!!!! তিনি মনে মনে বেশ কয়েকবার পড়লেন ইয়া নাফসি! ইয়া নাফসি!
ততক্ষনে ব্লগ পাড়ায় তার কুকির্তি ফাস হয়ে গিয়েছে।
৩।
কয়েকদিন পরে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখা গেলো! "নতুন তিনকোনা আবশ্যক"
বি দ্রঃ বাস্তবতার সাথে এই পোস্টের মিল পাওয়া গেলে তা হবে নিতান্ত ছাগুতালিয়।
- হুজুর, আসসালাম।
- নালায়েক! আগে "আসসালাম" বলবা। তার পর বলবা "হুজুর"।
- স্যরি হুজুর।
- ওরে নাখান্দা! "স্যরি" কি রে! ইহুদি নাসারাদের বুলি মুখে কেনো। যাক! আসল কথায় আসি। কোন আপডেট আছে?
- কিসের আপডেট হুজুর?
- তোমারে না বললাম নতুন পোস্ট দিতে! পোস্টের কি হলো?
- দিয়ে দিবো হুজুর। এখনি দিয়ে দিবো।
- ভুলে যেওনা তিনকোনা, আমাদের এখন বড় দুর্দিন। ব্লগ সেক্টরের দায়ীত্বে আছো তুমি। এখন তুমিই যদি তোমার কর্তব্যে হেলেফেলা করো সেটা তো আমাদের জন্য বরদাস্ত করা কঠিন হয়ে যাবে।
হুজুরের কন্ঠে বিরক্তির আভাশ। একটু ভয় পেয়ে গেলেন তিনকোনা। ভয়ে ভয়ে জবাব দিলেন,
- আজকের পারফর্মেন্স ভালো হবে হুজুর। নিশ্চিত থাকেন।
তিনকোনা ফোন রাখলেন। তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। বড় হুজুরের ভাবসাব তো বেশি সুবিধার মনে হলো না। এখন যদি চাকরিটা চলে যায় তাহলে তো পথে বসতে হবে। তিনকোনা আতংকে আর ভাবতে পারলেন না। তিনি মনে মনে একবার "ইয়া নাফসি" জপলেন।
তারপর ঝটপট বসে পড়লেন পিসির সামনে। ড্রয়ার থেকে "নিকখাতা" বের করলেন। এই নিকখাতাটাই তার সম্বল। তার প্রায় হাজার খানেক নিকের প্রতিটির পাসওয়ার্ড ও হালকা বিবরণ আছে এই খাতায়। উদাহারণ দেওয়া যাকঃ
নিকের নামঃ অমুক
বয়সঃ ২৫/২৬
রাজনৈতিক দর্শনঃ বি এন পি-র বেশে ছাগু।
সম্প্রতি কেচাল লেগেছেঃ তমুকের সাথে।
নিকের নামঃ তমুক
বয়সঃ ৩০
রাজনৈতিক দর্শনঃ সুশীল ছাগু(পিছলা ছাগু)
তিনকোনা এই নিকবইটি রেগুলার ঘষামাজা করেন। মুছেন। এডিট করেন।
যাই হোক, তিনকোনা সাহেব এবার সামু অপেন করলেন। একটা বিশেষ নিক থেকে লগইন করলেন। আজকে একটা ফাটাফাটি পোস্ট লিখতে হবে। এই পোস্টের বদৌলতে যদি ঈদবোনাসটা একটু তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়!
পোস্ট লেখা শুরু করলেন। পোস্টের বিষয় বস্তু আগেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে মগবাজার থেকে। তিনি সেটাকে একটু এডিট করে একটা পোস্ট লিখলেন।
জাতীয় জীবনে দূর্যোগের ঘনঘটাঃ প্রয়োজন তরুন ইসলামি নেতৃত্ব। --- শিরোনামের দিকে একবার ভালো করে তাকালেন। চমৎকার সুশিলিয় শিরোনাম হয়েছে। নিজেই নিজেকে জাঝা দিলেন একবার।
এবার তিনি আস্তে আস্তে বিস্তারিতটাও লিখে ফেললেন।
প্রথমেই শুরু করলেন ভারত প্রসঙ্গ দিয়ে। দেশ কিভাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, কিভাবে দেশের বারটা বেজে যাচ্ছে এই বিষয়ে হেনতেন করে একটা স্টার্টিং লিখলেন।
এরপর আসলেন ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে। এটা নিয়েও একটা জ্ঞানগর্ভ বয়ান দিলেন।
এরপর তিনি আসলেন মুল পয়েন্টে। এই পয়েন্টটা বেশ গুরত্বপূর্ণ। তাই তিনি মাথা আরেকটু ঠান্ডা করে লেখা শুরু করলেন, দেশ থেকে আজ ইসলাম খেদানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রখ্যাত ওয়াজি, আমির, দ্বিনী পন্ডিত সহ অনককেই জ্বেলে ভরে রাখা হয়েছে। তিনকোনা এই পরিস্থিতির হালকা একটা প্রতিবাদ জানালেন। তারপর লিখলেন দেশে এখন ইসলামি শাষন জরুরি। কৌশলে বুঝিয়ে দিলেন, এই জন্য জামাতে ইসলামির আর কোন বিকল্প নেই। এই টাইপের হাবিজাবি দিয়ে তিনি লেখা শেষ করে আনলেন। এবং আস্তে করে পোস্টটি প্রকাশ করে দিলেন।
তিনকোনা একটা তৃপ্তির হাসি হাসলেন। যাক পোস্ট করা গেলো। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, একটু টয়লেট থেকে এসে বিভিন্ন নিক থেকে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। এবং পোস্ট লেখকের সাথে সহমত জানাতে হবে। কেউ উলটাপালটা করলেই তাকে উত্তম হারে ধোলাই দিতে হবে।
এই প্রক্রিয়াটাকে তিনি নাম দিয়েছেন, "ব্লগ ফিক্সিং"। যদিও মগবাজারের হুজুরেরা এটাকে অদ্ভুত একটা উর্দু নামে ডাকেন।
২।
টয়লেট থেকে এসেই ঝাপিয়ে পড়লেন তিনকোনা।
দেখলেন খেলা জমে গেছে। মানুষ এসে গদাম দেওয়া শুরু করেছে। এখনি একশনে যাওয়ার সময়। তিনি কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই একশনে চলে গেলেন।
বেশ কিছু কমেন্ট দেওয়ার পরে খেয়াল করলেন ব্যাপারটা।
তিনি লগ আউট করেননি! ও মাই গড! লগ আউট না করেই তিনি এত কমেন্ট দিয়ে গেছেন। তারমানে দাড়াচ্ছে তিনি এতক্ষন নিজেই নিজের সাথে সহমত জানিয়েছেন, জাঝা দিয়েছেন!!!! তিনি মনে মনে বেশ কয়েকবার পড়লেন ইয়া নাফসি! ইয়া নাফসি!
ততক্ষনে ব্লগ পাড়ায় তার কুকির্তি ফাস হয়ে গিয়েছে।
৩।
কয়েকদিন পরে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখা গেলো! "নতুন তিনকোনা আবশ্যক"
বি দ্রঃ বাস্তবতার সাথে এই পোস্টের মিল পাওয়া গেলে তা হবে নিতান্ত ছাগুতালিয়।
valo
উত্তরমুছুন@Salim Ahmed khan thanx
উত্তরমুছুন