প্রফেসর আবদুল খালেক ছিলেন সিলেটের প্রথম রয়েল কলেজের ডিগ্রিধারী ডাক্তার। প্রফেসর এম. এনায়েত উল্লাহ দ্বিতীয়।
এম এনায়েত উল্লাহ যখন লন্ডন গেলেন তখন তার বাবা তাঁকে বলেছিলেন, 'আমি মরে গেলেও দেশে আসবানা, তোমার মা মরে গেলেও না।'
মা বাবা দুজনেই মরে গেলেন। তিনি দেশে আসলেন না। বাবার কথামতো দেশে ফিরলেন MRCP, FRCP নিয়ে।
রাজশাহী মেডিকেল ও সিলেট মেডিকেলের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।
অনেকেই জানেন না, আমরা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নিচে যে ১+০+১ লিখি সেটা প্রথম চালু করেছিলেন প্রফেসর এম এনায়েত উল্লাহ।
আরেকটা তথ্যও অনেকেই জানেন না, বাংলাদেশে প্রথম মেডিসিনের টেক্সট বই তিনিই লিখেছিলেন - 'এসেনসিয়াল অব মেডিসিন' (এবং বইটি ডেভিডসনের করসপন্ডিং এডিশনের চেয়ে বড় ছিলো)।
পাইরেসি হয়ে যাওয়ায় এটার নতুন এডিশন আর বের করেন নি।
আমার সৌভাগ্য, আমি স্যারের সরাসরি ছাত্র।
গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হচ্ছেনা।
আম গাছের নিচে আম জন্মায়। প্রফেসর এম এনায়েত উল্লাহ স্যারের ঘরে জন্ম নিয়েছেন ফজলে এলাহী নূরানী।
ইনিও ডাক্তার। স্যার যখন ইন্টারনাল মেডিসিনে এমডি পাশ করলেন আমরা তখন সম্ভবত ফোর্থ ইয়ারে। সন্ধ্যায় ক্লাস নিতে এসে জানালেন 'এমডি শেষ'।
আমি স্যারের দিকে ভালো করে তাকালাম। বাংলাদেশে একটা কথা প্রচলিত আছে - বয়স ৪০ না হলে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন পাশ হয়না। স্যার পাশ করলেন ৩০ এর আগেই!
পাশ না করে উপায় নেই। পরিপাটি করে চুল আঁচড়ানো এই মানুষটা একজন চলন্ত হ্যারিসন। মুখস্ত জিনিসটার প্রতি আমার এক ধরণের অ্যালার্জি ছিলো। ডা. ফজলে এলাহী নূরানীকে দেখার পর মনে হয়েছে - মুখস্ত জিনিসটাও আর্ট।
একটা উদাহারণ দেই - রাউন্ডে স্যার পড়া ধরেন অনেক। কাউকে হয়তো হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন হাইপোকেলেমিয়ার কজ বলো -
- স্যার, কুশিং সিন্ড্রোম।
- এইটা হ্যারিসনের ৪ নাম্বার হেডলাইনের ৩ নাম্বার কজ। আরো উপরে আসো।
- স্যার, কনস সিন্ড্রোম।
- এইটা ২ নাম্বার হেডলাইনের ৬ নাম্বার কজ। আরো উপরে আসো। এভাবে তো হবেনা।
কোরয়ানে হাফিজ দেখেছি। হ্যারিসনে হাফিজকে চিনলাম স্যারকে দেখে।
এনায়েত উল্লাহ স্যারের ছেলে হওয়ার কারনেই কিনা কে জানে, অসম্ভব ভালো পড়াতে পারেন। আমার ২৫ বছরের জীবনে পাওয়া সেরা শিক্ষক সন্দেহ নেই। আমি আমার মেডিকেল জীবনকে দুইভাগে ভাগ করি - নূরানী স্যারের ক্লাস করার আগের ভাগ আর নূরানী স্যারের ক্লাস করার পরের ভাগ।
১০/১২ দিন হেপাটাইটিসে ভুগলাম। প্রতিদিন সকাল ৮টায় একটা ফোন আসতো। স্ক্রিনে লেখা আসতো Noorani sir.
স্যার ফোন দিয়েই বলতেন - 'কী ব্যাপার রাজি, আজকে সুস্থ্য?'
আমি বিব্রত হতাম। আমার ভালো লাগতো। আমার গলা ধরে আসতো। ভালোবাসা আর স্নেহ জিনিসটা খারাপ, খুব খারাপ।
ইন্টার্নি শেষ হওয়ার পথে। কী কী মিস করবো জানিনা তবে নূরানী স্যারকে মিস করবো প্রচন্ড। সেই সাথে চমৎকার একটা স্মৃতিও গাঁথা থাকবে মাথায় - আমি সম্ভবত স্যারের প্রিয় ছাত্র ছিলাম।
এম এনায়েত উল্লাহ যখন লন্ডন গেলেন তখন তার বাবা তাঁকে বলেছিলেন, 'আমি মরে গেলেও দেশে আসবানা, তোমার মা মরে গেলেও না।'
মা বাবা দুজনেই মরে গেলেন। তিনি দেশে আসলেন না। বাবার কথামতো দেশে ফিরলেন MRCP, FRCP নিয়ে।
রাজশাহী মেডিকেল ও সিলেট মেডিকেলের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।
অনেকেই জানেন না, আমরা প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নিচে যে ১+০+১ লিখি সেটা প্রথম চালু করেছিলেন প্রফেসর এম এনায়েত উল্লাহ।
আরেকটা তথ্যও অনেকেই জানেন না, বাংলাদেশে প্রথম মেডিসিনের টেক্সট বই তিনিই লিখেছিলেন - 'এসেনসিয়াল অব মেডিসিন' (এবং বইটি ডেভিডসনের করসপন্ডিং এডিশনের চেয়ে বড় ছিলো)।
পাইরেসি হয়ে যাওয়ায় এটার নতুন এডিশন আর বের করেন নি।
আমার সৌভাগ্য, আমি স্যারের সরাসরি ছাত্র।
গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হচ্ছেনা।
আম গাছের নিচে আম জন্মায়। প্রফেসর এম এনায়েত উল্লাহ স্যারের ঘরে জন্ম নিয়েছেন ফজলে এলাহী নূরানী।
ইনিও ডাক্তার। স্যার যখন ইন্টারনাল মেডিসিনে এমডি পাশ করলেন আমরা তখন সম্ভবত ফোর্থ ইয়ারে। সন্ধ্যায় ক্লাস নিতে এসে জানালেন 'এমডি শেষ'।
আমি স্যারের দিকে ভালো করে তাকালাম। বাংলাদেশে একটা কথা প্রচলিত আছে - বয়স ৪০ না হলে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন পাশ হয়না। স্যার পাশ করলেন ৩০ এর আগেই!
পাশ না করে উপায় নেই। পরিপাটি করে চুল আঁচড়ানো এই মানুষটা একজন চলন্ত হ্যারিসন। মুখস্ত জিনিসটার প্রতি আমার এক ধরণের অ্যালার্জি ছিলো। ডা. ফজলে এলাহী নূরানীকে দেখার পর মনে হয়েছে - মুখস্ত জিনিসটাও আর্ট।
একটা উদাহারণ দেই - রাউন্ডে স্যার পড়া ধরেন অনেক। কাউকে হয়তো হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন হাইপোকেলেমিয়ার কজ বলো -
- স্যার, কুশিং সিন্ড্রোম।
- এইটা হ্যারিসনের ৪ নাম্বার হেডলাইনের ৩ নাম্বার কজ। আরো উপরে আসো।
- স্যার, কনস সিন্ড্রোম।
- এইটা ২ নাম্বার হেডলাইনের ৬ নাম্বার কজ। আরো উপরে আসো। এভাবে তো হবেনা।
কোরয়ানে হাফিজ দেখেছি। হ্যারিসনে হাফিজকে চিনলাম স্যারকে দেখে।
এনায়েত উল্লাহ স্যারের ছেলে হওয়ার কারনেই কিনা কে জানে, অসম্ভব ভালো পড়াতে পারেন। আমার ২৫ বছরের জীবনে পাওয়া সেরা শিক্ষক সন্দেহ নেই। আমি আমার মেডিকেল জীবনকে দুইভাগে ভাগ করি - নূরানী স্যারের ক্লাস করার আগের ভাগ আর নূরানী স্যারের ক্লাস করার পরের ভাগ।
১০/১২ দিন হেপাটাইটিসে ভুগলাম। প্রতিদিন সকাল ৮টায় একটা ফোন আসতো। স্ক্রিনে লেখা আসতো Noorani sir.
স্যার ফোন দিয়েই বলতেন - 'কী ব্যাপার রাজি, আজকে সুস্থ্য?'
আমি বিব্রত হতাম। আমার ভালো লাগতো। আমার গলা ধরে আসতো। ভালোবাসা আর স্নেহ জিনিসটা খারাপ, খুব খারাপ।
ইন্টার্নি শেষ হওয়ার পথে। কী কী মিস করবো জানিনা তবে নূরানী স্যারকে মিস করবো প্রচন্ড। সেই সাথে চমৎকার একটা স্মৃতিও গাঁথা থাকবে মাথায় - আমি সম্ভবত স্যারের প্রিয় ছাত্র ছিলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।