আগের পর্বে আমরা বলেছি, ইসিজি ম্যাশিনে অকটোপাশের ঠ্যাং-এর মতো অনেকগুলো ঠ্যাং থাকে। এই ঠ্যাং-গুলোরা একেক নাম। যেমন লিড I, II, III, V1, V2, V3...V6 ইত্যাদি। একেক লিড একেক এঙ্গেল থেকে হার্টকে দেখে।
এই পর্বের শুরতে আমরা ম্যাশিনের সব ঠ্যাং অর্থাৎ অন্য সব লিডের কথা ভুলে যাবো। মনে রাখবো কেবল মাত্র একটা লিডের কথা, যেটার নাম হচ্ছে V6। এই V6 এর ঘটনাটা বুঝে গেলে বাকি সব লিডের ঘটনাও আমরা বুঝে যাবো।
ওকে... স্টার্ট... ওয়ান টূ থ্রি...
V6 হার্টকে দেখে লেফট মিড অ্যাক্সিলারি লাইনে ফিফথ ইন্টার ইন্টারকোস্টাল স্পেস থেকে। অনেকটা নিচের ছবির মতো যায়গা থেকে -
আরো খোলামেলাভাবে দেখালে V6 হার্টকে দেখে এভাবে -
ব্যাস, লিডকে যায়গামতো বসানোর কাজ আমাদের শেষ।
এখন আমরা লিডকে রিকোয়েস্ট করবো, 'ভাই লিড V6, আমাদেরকে একটু হার্টের অবস্থাটা দেখিয়ে দাও।'
এখন কাজ শুরু করলো V6...
হার্টের কন্ডাকটিভ সিস্টেমটা আরেকবার মাথায় ঘেথে নিয়ে ব্যাপারটা চিন্তা করি- SA নোডে কারেন্ট তৈরী হলো - সে কারেন্ট AV নোডে আসলো এবং দুইটা অ্যাট্রিয়ামকে ডিপোলারাইজড করলো অর্থাৎ অ্যাট্রিয়াম কন্ট্রাক্ট করলো। এই পুরো প্রক্রিয়াটা V6 দেখলো এবং আমাদেরকে নিচের মতো একটা ছবি এঁকে দিলো (লাল রঙ্গা অংশ) -
এই লাল অংশটা হচ্ছে P Wave. মানে P ওয়েভ মানে হচ্ছে অ্যাট্রিয়ামের ডিপোলারাইজেন।
এই অবস্থায় কিছুক্ষণ হার্ট থমকে থাকলো। V6 এবার এই থমকে থাকা অবস্থার ছবি আঁকলো। P Wave'এর পরে যে ছোট্ট ফ্ল্যাট অংশটা দেখা যাচ্ছে সেটাই হলো এই থমকে থাকা অবস্থার ছবি। এটাকে বলে আইসোইলেকট্রিক লাইন।
স্পষ্ট করে নিচে দেখিয়ে দিচ্ছি জিনিসটা।
অ্যাট্রিয়ামের কাজ মোটামুটি শেষ। এবার কারেন্ট আসলো রাইট এন্ড লেফট বান্ডল ব্রাঞ্চে। আমরা রাইটটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবো না। আমরা মাথা ঘামাবো লেফট ফাইভার নিয়ে।
এই লেফটটা দিয়ে কারেন্ট ছড়িয়ে যাবে ভেন্ট্রিকলে।
আমরা জানি দুইটা ভেন্ট্রিকলের মাঝখানে থাকে ইন্টারভেন্ট্রিকুলার সেপটাম।
প্রথমে ডিপোলারাইজড এই সেপটামটা। (ফিগার নাম্বার 5 ছবির A চিহ্নিত অংশ।)
ফিগার ৫
ওকে... সেপটাম ডিপোলারাইজড হলো - আমাদের প্রিয় V6 এই প্রক্রিয়াটা এঁকে দিলো Q ওয়েভ হিশেবে। (ফিগার নাম্বার ৬)
ফিগার ৬
ইন্টারভেন্ট্রিকুলার সেপটাম শেষ, এখন লেফট ভেন্ট্রিকুলার থিকনেস। (ফিগার নাম্বার ৫ এর B চিহ্নিত অংশ।)
এই অংশটাও ডিপোলারাইজড হলো। V6 এঁকে দিলো R ওয়েভ। (ফিগার ৬)
তাহলে S ওয়েভটা কী?
এটা হচ্ছে রাইট ভেন্ট্রিকলের ডিপোরাইজেশন।
অর্থাৎ, আমরা বুঝতে পারলাম যে, পুরো QRS কমপ্লেক্সটা হচ্ছে ভেন্ট্রিকলের কন্ট্রাকশন।
এই কন্ট্রাকশনের পরে হার্ট আরেকবার থমকে যায়। সৃষ্টি হয় আরেকটা আইসোইলেকট্রিক লাইন। ফিগার ৬-এ S এর পরে এই লাইনটা দেখা যাচ্ছে দেখা।
ওয়েল, ভেন্ট্রিকল ডিপোলারাইজড হলো। এখন তো তাকে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে, নাকি? মানে রিপোলারাইজড হতে হবে। T ওয়েভটা হচ্ছে এই রিপোলারাইজেশন। (ফিগার 6)
মোটামুটি এই হচ্ছে একটা ইসিজির ওয়েভ।
এখন কিছু প্রশ্ন সবার মনে জাগতে পারে। নিচে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম।
প্রশ্নঃ কী মিয়া, ভেন্ট্রিকুলের রিপোলারাইজেশন দেখাইলেন, অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশন দেখাইলেন না ক্যান?
উত্তরঃ ইয়েস, অ্যাট্রিয়ামেরও রিপোলারাইজেশন হয়। কিন্তু অ্যাট্রিয়াম আসলে তখন রিপোলারাইজড হয় যখন ভেন্ট্রিকল ডিপোলারাইজড হয়। যার ফলে এই দুইটা ঘটনার মধ্যে অভারলেপিং হয়ে যায়। এই কারণে আমরা অ্যাট্রিয়াল রিপোলারাইজেশনটা ঠিকমতো দেখিনা।
আরেকটা কারণ হলো, অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশনের সময় কারেন্টের পার্থক্য এতো কম হয় যে সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকেনা শেষ পর্যন্ত।
তবে কিছু বইতে লেখা আছে, মাঝে মাঝে অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশন ওয়েভ দেখা যায়। সেটাকে বলে Ta ওয়েভ।
প্রশ্নঃ অ্যাট্রিয়ামের ডিপোলারাইজেশনে এতো ছোট পি ওয়েভ তৈরী হলো, কিন্তু ভেন্ট্রিকুলের ক্ষেত্রে বিশাল বড় QRS কমপ্লেক্স তৈরী হলো। ঘটনা কী?
উত্তরঃ ভেন্ট্রিকলের থিকনেস অ্যাট্রিয়ামের চেয়ে বেশি।
প্রশ্নঃ রাইট ভেন্ট্রিকল কী দোষ করলো? রাইট বান্ডল ব্রাঞ্চেই বা সমস্যা কী? উত্তর দ্যান।
উত্তরঃ হার্টের টু থার্ডই গঠন করে লেফট ভেন্ট্রিকল। বেশিরভাগ প্যাথলোজিই হয় এখানে। আর লেফট ভেন্ট্রিকলের কারেন্টই আলটিমেটলি রাইট ভেন্ট্রিকলে ছড়িয়ে যায়।
মজার একটা ব্যাপার হলো, একজন সুস্থ মানুষের ইসিজি করলে রাইট বান্ডল ব্রাঞ্চে ব্লক পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এটা খুব বেশি টেনশনের কিছু না। কারণ রাইট-টার কাজ লেফট দিয়ে চলে যায়। কিন্তু লেফটটায় ব্লক হলে খবর আছে।
এজন্য আমরা ইসিজিতে মূলক বামপন্থী আলোচনাই বেশী করছি।
তবে ডানপন্থী আলোচনা যে করবোনা, তা না। করবো নিশ্চয়ই। আগে গুরুত্বপূর্ণগুলো শেষ করি। :)
প্রশ্নঃ এতো লিড থাকতে V6 টা নিলেন কেন?
উত্তরঃ V6 যে এঙ্গেল থেকে হার্টকে দেখে ওখান থেকে ওয়েভগুলো আসলে ভালোভাবে বুঝা যায়। (V5-এও ভালো বুঝা যায়।)
ইচ্ছা করলে V1 নেয়া যেতো। কিন্তু V1 হার্টকে দেখে রাইট ফোর্থ ইন্টারকোর্স স্পেস থেকে। একারণে ওই লিডে QRS কমপ্লেক্সে কিছুটা উলট পালট লেগে যায়। V1 হার্টকে রাইট হার্টের কাছ থেকে দেখে বলে এই লিডে রাইট ভেন্ট্রিকলের ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ (S) একটু বড় আকারে ধরা পড়ে যার ফলে S ওয়েভ থাকে ডিপ (প্রমিনেন্ট), R থাকে কম লম্বা। (V2 তেও ঘটনা সেইম)
এটা দেখলে V1 ও V6 এর পার্থক্যটা বুঝা যাবে। V6 এ কী সুন্দর দেখা যাচ্ছে! আর v1 এ QRS একটু অন্যরকম।
প্রশ্নঃ ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ একবার যাচ্ছে নিচ দিয়ে আরেকবার উপর দিয়ে। ঘটনা কী?
উত্তরঃ এটা অনেকেরই প্রশ্ন। প্রশ্নটাও যৌক্তিক। ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ যদি উপরের দিকে যায় তাহলে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ তো নিচের দিকে যাওয়া কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ T উপরের দিকে যাচ্ছে। কেন? উত্তর দেই?
এটা আসলে ডিপোলারাইজেশন ওয়েভের ডিরেকশনের উপর নির্ভর করে। ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ যে ডিরেকশনে হয় রিপোলারাইজেশন হয় তার বিপরীত দিকে। এই কারণে T উপরের দিকে থাকে। একই কারণে Q ওয়েভ অর্থাৎ ইন্টারভেন্ট্রুকুলার সেপটামের ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ থাকে নিচের দিকে।
ছবি এঁকে বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করি।
উপরের ছবিতে ডিপোলারাইজেশনের ডিরেকশন আর এর মাধ্যমে তৈরি ওয়েভগুলো দেখানো হলো। দেখা যাচ্ছে ডিরেকশন যখন লিডের বরাবরা হচ্ছে তখন ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ উপরের দিকে উঠছে। আবার ডিরেকশন যখন লিডের বিপরীত দিকে হচ্ছে তখন ওয়েভ নিচের দিকে যাচ্ছে।
একইভাবে রিপোলারাইজেশন হয় লিডের বিপরীতদিকে। একারণে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ থাকে উপরের দিকে।
ছবি আঁকা যাক-
সামারি দাড়ালো -
ডিপোলারাইজেশন লিড বরাবর হলে ওয়েভ উপরের দিকে
ডিপোলারাইজেশন লিডের উলটা দিকে হলে ওয়েভ নিচের দিকে
আবার,
রিপোলারাইজেশন লিড বরাবর হলে ওয়েভ নিচের দিকে
রিপোলারাইজেশন লিডের উলটা দিকে হলে ওয়েভ উপরের দিকে।
আপাতত এই পর্ব শেষ। আমি সমালোচনা আশা করছি সবার কাছ থেকে।
আগের পর্বঃ
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব শূন্য- আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব এক - লাইট... ক্যামেরা... অ্যাকশন...
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব দুই - খাম্বা সিন্ডিকেট
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব চার - কী করিলে বলো পাইবো তোমারে...
এই পর্বের শুরতে আমরা ম্যাশিনের সব ঠ্যাং অর্থাৎ অন্য সব লিডের কথা ভুলে যাবো। মনে রাখবো কেবল মাত্র একটা লিডের কথা, যেটার নাম হচ্ছে V6। এই V6 এর ঘটনাটা বুঝে গেলে বাকি সব লিডের ঘটনাও আমরা বুঝে যাবো।
ওকে... স্টার্ট... ওয়ান টূ থ্রি...
V6 হার্টকে দেখে লেফট মিড অ্যাক্সিলারি লাইনে ফিফথ ইন্টার ইন্টারকোস্টাল স্পেস থেকে। অনেকটা নিচের ছবির মতো যায়গা থেকে -
আরো খোলামেলাভাবে দেখালে V6 হার্টকে দেখে এভাবে -
ব্যাস, লিডকে যায়গামতো বসানোর কাজ আমাদের শেষ।
এখন আমরা লিডকে রিকোয়েস্ট করবো, 'ভাই লিড V6, আমাদেরকে একটু হার্টের অবস্থাটা দেখিয়ে দাও।'
এখন কাজ শুরু করলো V6...
হার্টের কন্ডাকটিভ সিস্টেমটা আরেকবার মাথায় ঘেথে নিয়ে ব্যাপারটা চিন্তা করি- SA নোডে কারেন্ট তৈরী হলো - সে কারেন্ট AV নোডে আসলো এবং দুইটা অ্যাট্রিয়ামকে ডিপোলারাইজড করলো অর্থাৎ অ্যাট্রিয়াম কন্ট্রাক্ট করলো। এই পুরো প্রক্রিয়াটা V6 দেখলো এবং আমাদেরকে নিচের মতো একটা ছবি এঁকে দিলো (লাল রঙ্গা অংশ) -
এই লাল অংশটা হচ্ছে P Wave. মানে P ওয়েভ মানে হচ্ছে অ্যাট্রিয়ামের ডিপোলারাইজেন।
এই অবস্থায় কিছুক্ষণ হার্ট থমকে থাকলো। V6 এবার এই থমকে থাকা অবস্থার ছবি আঁকলো। P Wave'এর পরে যে ছোট্ট ফ্ল্যাট অংশটা দেখা যাচ্ছে সেটাই হলো এই থমকে থাকা অবস্থার ছবি। এটাকে বলে আইসোইলেকট্রিক লাইন।
স্পষ্ট করে নিচে দেখিয়ে দিচ্ছি জিনিসটা।
অ্যাট্রিয়ামের কাজ মোটামুটি শেষ। এবার কারেন্ট আসলো রাইট এন্ড লেফট বান্ডল ব্রাঞ্চে। আমরা রাইটটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবো না। আমরা মাথা ঘামাবো লেফট ফাইভার নিয়ে।
এই লেফটটা দিয়ে কারেন্ট ছড়িয়ে যাবে ভেন্ট্রিকলে।
আমরা জানি দুইটা ভেন্ট্রিকলের মাঝখানে থাকে ইন্টারভেন্ট্রিকুলার সেপটাম।
প্রথমে ডিপোলারাইজড এই সেপটামটা। (ফিগার নাম্বার 5 ছবির A চিহ্নিত অংশ।)
ফিগার ৫
ওকে... সেপটাম ডিপোলারাইজড হলো - আমাদের প্রিয় V6 এই প্রক্রিয়াটা এঁকে দিলো Q ওয়েভ হিশেবে। (ফিগার নাম্বার ৬)
ফিগার ৬
ইন্টারভেন্ট্রিকুলার সেপটাম শেষ, এখন লেফট ভেন্ট্রিকুলার থিকনেস। (ফিগার নাম্বার ৫ এর B চিহ্নিত অংশ।)
এই অংশটাও ডিপোলারাইজড হলো। V6 এঁকে দিলো R ওয়েভ। (ফিগার ৬)
তাহলে S ওয়েভটা কী?
এটা হচ্ছে রাইট ভেন্ট্রিকলের ডিপোরাইজেশন।
অর্থাৎ, আমরা বুঝতে পারলাম যে, পুরো QRS কমপ্লেক্সটা হচ্ছে ভেন্ট্রিকলের কন্ট্রাকশন।
এই কন্ট্রাকশনের পরে হার্ট আরেকবার থমকে যায়। সৃষ্টি হয় আরেকটা আইসোইলেকট্রিক লাইন। ফিগার ৬-এ S এর পরে এই লাইনটা দেখা যাচ্ছে দেখা।
ওয়েল, ভেন্ট্রিকল ডিপোলারাইজড হলো। এখন তো তাকে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে, নাকি? মানে রিপোলারাইজড হতে হবে। T ওয়েভটা হচ্ছে এই রিপোলারাইজেশন। (ফিগার 6)
মোটামুটি এই হচ্ছে একটা ইসিজির ওয়েভ।
এখন কিছু প্রশ্ন সবার মনে জাগতে পারে। নিচে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলাম।
প্রশ্নঃ কী মিয়া, ভেন্ট্রিকুলের রিপোলারাইজেশন দেখাইলেন, অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশন দেখাইলেন না ক্যান?
উত্তরঃ ইয়েস, অ্যাট্রিয়ামেরও রিপোলারাইজেশন হয়। কিন্তু অ্যাট্রিয়াম আসলে তখন রিপোলারাইজড হয় যখন ভেন্ট্রিকল ডিপোলারাইজড হয়। যার ফলে এই দুইটা ঘটনার মধ্যে অভারলেপিং হয়ে যায়। এই কারণে আমরা অ্যাট্রিয়াল রিপোলারাইজেশনটা ঠিকমতো দেখিনা।
আরেকটা কারণ হলো, অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশনের সময় কারেন্টের পার্থক্য এতো কম হয় যে সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকেনা শেষ পর্যন্ত।
তবে কিছু বইতে লেখা আছে, মাঝে মাঝে অ্যাট্রিয়ামের রিপোলারাইজেশন ওয়েভ দেখা যায়। সেটাকে বলে Ta ওয়েভ।
প্রশ্নঃ অ্যাট্রিয়ামের ডিপোলারাইজেশনে এতো ছোট পি ওয়েভ তৈরী হলো, কিন্তু ভেন্ট্রিকুলের ক্ষেত্রে বিশাল বড় QRS কমপ্লেক্স তৈরী হলো। ঘটনা কী?
উত্তরঃ ভেন্ট্রিকলের থিকনেস অ্যাট্রিয়ামের চেয়ে বেশি।
প্রশ্নঃ রাইট ভেন্ট্রিকল কী দোষ করলো? রাইট বান্ডল ব্রাঞ্চেই বা সমস্যা কী? উত্তর দ্যান।
উত্তরঃ হার্টের টু থার্ডই গঠন করে লেফট ভেন্ট্রিকল। বেশিরভাগ প্যাথলোজিই হয় এখানে। আর লেফট ভেন্ট্রিকলের কারেন্টই আলটিমেটলি রাইট ভেন্ট্রিকলে ছড়িয়ে যায়।
মজার একটা ব্যাপার হলো, একজন সুস্থ মানুষের ইসিজি করলে রাইট বান্ডল ব্রাঞ্চে ব্লক পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এটা খুব বেশি টেনশনের কিছু না। কারণ রাইট-টার কাজ লেফট দিয়ে চলে যায়। কিন্তু লেফটটায় ব্লক হলে খবর আছে।
এজন্য আমরা ইসিজিতে মূলক বামপন্থী আলোচনাই বেশী করছি।
তবে ডানপন্থী আলোচনা যে করবোনা, তা না। করবো নিশ্চয়ই। আগে গুরুত্বপূর্ণগুলো শেষ করি। :)
প্রশ্নঃ এতো লিড থাকতে V6 টা নিলেন কেন?
উত্তরঃ V6 যে এঙ্গেল থেকে হার্টকে দেখে ওখান থেকে ওয়েভগুলো আসলে ভালোভাবে বুঝা যায়। (V5-এও ভালো বুঝা যায়।)
ইচ্ছা করলে V1 নেয়া যেতো। কিন্তু V1 হার্টকে দেখে রাইট ফোর্থ ইন্টারকোর্স স্পেস থেকে। একারণে ওই লিডে QRS কমপ্লেক্সে কিছুটা উলট পালট লেগে যায়। V1 হার্টকে রাইট হার্টের কাছ থেকে দেখে বলে এই লিডে রাইট ভেন্ট্রিকলের ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ (S) একটু বড় আকারে ধরা পড়ে যার ফলে S ওয়েভ থাকে ডিপ (প্রমিনেন্ট), R থাকে কম লম্বা। (V2 তেও ঘটনা সেইম)
এটা দেখলে V1 ও V6 এর পার্থক্যটা বুঝা যাবে। V6 এ কী সুন্দর দেখা যাচ্ছে! আর v1 এ QRS একটু অন্যরকম।
প্রশ্নঃ ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ একবার যাচ্ছে নিচ দিয়ে আরেকবার উপর দিয়ে। ঘটনা কী?
উত্তরঃ এটা অনেকেরই প্রশ্ন। প্রশ্নটাও যৌক্তিক। ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ যদি উপরের দিকে যায় তাহলে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ তো নিচের দিকে যাওয়া কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ T উপরের দিকে যাচ্ছে। কেন? উত্তর দেই?
এটা আসলে ডিপোলারাইজেশন ওয়েভের ডিরেকশনের উপর নির্ভর করে। ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ যে ডিরেকশনে হয় রিপোলারাইজেশন হয় তার বিপরীত দিকে। এই কারণে T উপরের দিকে থাকে। একই কারণে Q ওয়েভ অর্থাৎ ইন্টারভেন্ট্রুকুলার সেপটামের ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ থাকে নিচের দিকে।
ছবি এঁকে বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করি।
উপরের ছবিতে ডিপোলারাইজেশনের ডিরেকশন আর এর মাধ্যমে তৈরি ওয়েভগুলো দেখানো হলো। দেখা যাচ্ছে ডিরেকশন যখন লিডের বরাবরা হচ্ছে তখন ডিপোলারাইজেশন ওয়েভ উপরের দিকে উঠছে। আবার ডিরেকশন যখন লিডের বিপরীত দিকে হচ্ছে তখন ওয়েভ নিচের দিকে যাচ্ছে।
একইভাবে রিপোলারাইজেশন হয় লিডের বিপরীতদিকে। একারণে রিপোলারাইজেশন ওয়েভ থাকে উপরের দিকে।
ছবি আঁকা যাক-
সামারি দাড়ালো -
ডিপোলারাইজেশন লিড বরাবর হলে ওয়েভ উপরের দিকে
ডিপোলারাইজেশন লিডের উলটা দিকে হলে ওয়েভ নিচের দিকে
আবার,
রিপোলারাইজেশন লিড বরাবর হলে ওয়েভ নিচের দিকে
রিপোলারাইজেশন লিডের উলটা দিকে হলে ওয়েভ উপরের দিকে।
আপাতত এই পর্ব শেষ। আমি সমালোচনা আশা করছি সবার কাছ থেকে।
আগের পর্বঃ
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব শূন্য- আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব এক - লাইট... ক্যামেরা... অ্যাকশন...
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব দুই - খাম্বা সিন্ডিকেট
# ইসিজির অ আ ক খঃ পর্ব চার - কী করিলে বলো পাইবো তোমারে...
nice👌, but it's will be better than when discussion with more image.
উত্তরমুছুন