আমরা ১০ তারিখ কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা হয়, রাস্তায় বাস ডাকাতি হয়। আমরা প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী। ঠিকঠাকমতো যেতে পারবো তো কক্সবাজার? ভয়ের কোনো সীমা নেই আমাদের ভেতরে।
এই যখন অবস্থা, তখন ভয় আরো বাড়িয়ে দিলো সাকিব আহমেদ, ব্যাচের সবচেয়ে কর্মঠ আর চঞ্চল ছেলে। যেকোনো অনুষ্ঠানে সে সব দায়ীত্ব নিজের কাধে নেয় এবং একটা পর্যায়ে এসে সব গিট্টূ লাগিয়ে দেয়।
যাই হোক, সাকিব সকাল, দুপুর, রাত তিনবেলা আমাদেরকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে শুরু করলো।
কলেজের গ্রুপে আবহাওবিদের সে মতো পোস্ট দেয়, '১০ তারিখ কক্সবাজারে তুমুল বৃষ্টি হবে।'
আমরা পোস্টে উৎকন্ঠা নিয়ে কমেন্ট করি, 'কী হবে এখন?'।
সাকিব সেখানে রিপ্লাই দেয় 'সমস্যা নেই, দেখি কী হয়!' ভাবখানা এমন যে সে খুব চেষ্টা চরিত্র চালাচ্ছে আবহাওয়া ঠিক করার জন্য। যেকোনো মুহূর্তে সে ঠিক করে ফেলবে।
ঠিক আর হয়না। কিছুক্ষণ পর সে আবার পোস্ট দেয়, 'শুধু বৃষ্টি না, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।' আমাদের দুশ্চিন্তা আরো বাড়ে।
দ্বিগুন উৎকন্ঠা নিয়ে আবার কমেন্ট করি আমরা।
সবচেয়ে বেশি উৎকন্ঠা মেয়েদের। তানিয়া, সাদিয়া, জুই, পারমিতা প্রমুখ সুন্দরী স্যাড ইমো সহ জানায় 'আমরা চুলে কালার করেছি, মুখে ম্যাকআপ নেয়ার প্ল্যান করছি। বৃষ্টি হলে তো কালার কুলার ধুয়ে যাবে।'
আমরা তাদের কমেন্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলি। আহা!
একটু পর আবার পোস্ট দেয় সাকিব, 'শুধু বজ্র সহ বৃষ্টি নয়, হালকা থেকে মাঝারি কিংবা দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে উপকূলিয় অঞ্চলে। ৩ নম্বর বিপদ সংকতে দেখানো হতে পারে তখন।' এবার সে সাথে উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবির স্ক্রিনশট পোস্ট করে।
স্ক্রিনশট দেখে আমরা মাথামন্ডু কিছুই বুঝি না। আমাদের বুঝার সুবিধার্থে সাকিব যায়গায় যায়গায় গোল চিহ্ন এঁকে বুঝিয়ে দেয়, 'এই এই যায়গায় লঘুচাল সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি দক্ষিণ পূর্ব দিকে সরে এখন কক্সবাজারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অতএব ১০ তারিখ তুমুল বৃষ্টি হবে। নিশ্চিত। আর কোনো উপায় নাই।'
আমরা মুখ শুকনা করে ৯ তারিখ রাতে গাড়িতে উঠলাম। কী আর করা! ঝুম বৃষ্টির মাঝে তো মজা করা যাবে না। যা করার গাড়িতেই করি। দুইটা বিরাট সাইজের বাস। আমরা বাসে প্রচুর হাউকাউ করলাম।
বাস যতোই কক্সবাজারের কাছাকাছি যাচ্ছে ততোই মন খারাপ হচ্ছে। ইশশশ্ 'হালকা থেকে মাঝারী বাতাস কিংবা দমকা হাওয়া'র মধ্যে কী যে করবো! সব মজাই মাটি।
বাস পৌছালো ১০ তারিখ দুপুরের দিকে। গিয়ে দেখি ঝকঝকে রোদ। রোদে সৈকতের বালি চিকচিক করছে। আমরা সাকিবের দিকে তাকালাম। বেচারার মুখের দিকে তাকানো যায়না, এমন অবস্থা। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আকাশে মেঘ না থাকলেও সাকিবের মুখে রাজ্যের মেঘ। মুখ ঘুটঘুটে অন্ধকার!
আমি তাঁকে স্বান্তনা দিলাম, 'মামা, টেনশন নিস না। নেক্সট টাইম নিশ্চয়ই 'হালকা থেকে মাঝারী বাতাস কিংবা দমকা হাওয়া' হবে।
... ... ...
{(চলবে...) মনে হয়}
পর্ব ১ কবে লিখেছিলাম ভুলে গেছি। সম্ভবত বছরখানেক আগে।
যৌবন মিশিয়া গেলো জলে - পর্ব ‘মাইনাস ওয়ান’: যৌবন নিয়া টানাটানি ~ খেয়ালিকা
এই যখন অবস্থা, তখন ভয় আরো বাড়িয়ে দিলো সাকিব আহমেদ, ব্যাচের সবচেয়ে কর্মঠ আর চঞ্চল ছেলে। যেকোনো অনুষ্ঠানে সে সব দায়ীত্ব নিজের কাধে নেয় এবং একটা পর্যায়ে এসে সব গিট্টূ লাগিয়ে দেয়।
যাই হোক, সাকিব সকাল, দুপুর, রাত তিনবেলা আমাদেরকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে শুরু করলো।
কলেজের গ্রুপে আবহাওবিদের সে মতো পোস্ট দেয়, '১০ তারিখ কক্সবাজারে তুমুল বৃষ্টি হবে।'
আমরা পোস্টে উৎকন্ঠা নিয়ে কমেন্ট করি, 'কী হবে এখন?'।
সাকিব সেখানে রিপ্লাই দেয় 'সমস্যা নেই, দেখি কী হয়!' ভাবখানা এমন যে সে খুব চেষ্টা চরিত্র চালাচ্ছে আবহাওয়া ঠিক করার জন্য। যেকোনো মুহূর্তে সে ঠিক করে ফেলবে।
ঠিক আর হয়না। কিছুক্ষণ পর সে আবার পোস্ট দেয়, 'শুধু বৃষ্টি না, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।' আমাদের দুশ্চিন্তা আরো বাড়ে।
দ্বিগুন উৎকন্ঠা নিয়ে আবার কমেন্ট করি আমরা।
সবচেয়ে বেশি উৎকন্ঠা মেয়েদের। তানিয়া, সাদিয়া, জুই, পারমিতা প্রমুখ সুন্দরী স্যাড ইমো সহ জানায় 'আমরা চুলে কালার করেছি, মুখে ম্যাকআপ নেয়ার প্ল্যান করছি। বৃষ্টি হলে তো কালার কুলার ধুয়ে যাবে।'
আমরা তাদের কমেন্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলি। আহা!
একটু পর আবার পোস্ট দেয় সাকিব, 'শুধু বজ্র সহ বৃষ্টি নয়, হালকা থেকে মাঝারি কিংবা দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে উপকূলিয় অঞ্চলে। ৩ নম্বর বিপদ সংকতে দেখানো হতে পারে তখন।' এবার সে সাথে উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবির স্ক্রিনশট পোস্ট করে।
স্ক্রিনশট দেখে আমরা মাথামন্ডু কিছুই বুঝি না। আমাদের বুঝার সুবিধার্থে সাকিব যায়গায় যায়গায় গোল চিহ্ন এঁকে বুঝিয়ে দেয়, 'এই এই যায়গায় লঘুচাল সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি দক্ষিণ পূর্ব দিকে সরে এখন কক্সবাজারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অতএব ১০ তারিখ তুমুল বৃষ্টি হবে। নিশ্চিত। আর কোনো উপায় নাই।'
আমরা মুখ শুকনা করে ৯ তারিখ রাতে গাড়িতে উঠলাম। কী আর করা! ঝুম বৃষ্টির মাঝে তো মজা করা যাবে না। যা করার গাড়িতেই করি। দুইটা বিরাট সাইজের বাস। আমরা বাসে প্রচুর হাউকাউ করলাম।
বাস যতোই কক্সবাজারের কাছাকাছি যাচ্ছে ততোই মন খারাপ হচ্ছে। ইশশশ্ 'হালকা থেকে মাঝারী বাতাস কিংবা দমকা হাওয়া'র মধ্যে কী যে করবো! সব মজাই মাটি।
বাস পৌছালো ১০ তারিখ দুপুরের দিকে। গিয়ে দেখি ঝকঝকে রোদ। রোদে সৈকতের বালি চিকচিক করছে। আমরা সাকিবের দিকে তাকালাম। বেচারার মুখের দিকে তাকানো যায়না, এমন অবস্থা। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আকাশে মেঘ না থাকলেও সাকিবের মুখে রাজ্যের মেঘ। মুখ ঘুটঘুটে অন্ধকার!
আমি তাঁকে স্বান্তনা দিলাম, 'মামা, টেনশন নিস না। নেক্সট টাইম নিশ্চয়ই 'হালকা থেকে মাঝারী বাতাস কিংবা দমকা হাওয়া' হবে।
... ... ...
{(চলবে...) মনে হয়}
পর্ব ১ কবে লিখেছিলাম ভুলে গেছি। সম্ভবত বছরখানেক আগে।
যৌবন মিশিয়া গেলো জলে - পর্ব ‘মাইনাস ওয়ান’: যৌবন নিয়া টানাটানি ~ খেয়ালিকা
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।