প্রায় চার মাস নেটছাড়া অবস্থায় ছিলাম। অবশেষে এই মাসের শুরুর দিকে পিসিতে নেট নিলাম। চার মাস পরে নেট নিয়ে আমি আক্ষরিক অর্থেই বেশ এক্সাইটেড হয়ে গেলাম। এক্সাইটমেন্টের চোটে মানুষ কতোকিছু করে! আমিও একটা কান্ড করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম কবি হয়ে যাবো। যেই সেই কবি না, একেবারে উত্তরাধুনিক কবি। কবিতা লিখে লিখে ফাটিয়ে ফেলবো দুনিয়া।
যাই হোক, উত্তরাধূনিক কবিতা এবং কবি - দুটাই সম্পুর্ণ আলাদা জিনিস। তাই ভাবলাম নিজ নামে না, ভিন্ন নাম এবং ভিন্ন স্বত্তা নিয়ে মাঠে নামবো।
ফেসবুক এবং ব্লগে নতুন আইডি খুললাম। নাম দিলাম একজন কাউয়া। ফ্রেন্ডলিস্টে এড করে নিলাম সব বিখ্যাত ব্লগার আর ফেসবুকারদেরকে। যাদেরকে রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারলাম না তাদের গ্রাহক হয়ে গেলাম।
শেষমেষ... এক অমবশ্যার রাত্রীতে বিসমিল্লাহ বলে কবিতা লেখা শুরু করলাম। প্রোফাইল করে দিলাম পাবলিক।
আমার কবিতায় মুগ্ধ হয়ে কিনা জানি না - অনেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো। সব এক্সেপ্ট করলাম। অনেকে ইনবক্স করলো 'কাউয়া ভাই, আপনার কবিতা আমার অনেক ভালো লাগে। প্লিইইইইইজ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টটা এক্সেপ্ট করুন।' 'আপনি তো ভাই দারুন লিখেন' 'ভাই চালিয়ে যান'...... এসব মেসেজ পড়ে আমার নয়ন আদ্র হলো।
কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর বেশ কিছু মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে। কয়েকটা বলা দরকার।
১) বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। প্রস্তাব দিয়েছেন ফারাবী শাফিউর রহমান। একদিন তিনি চ্যাটে বললেন - 'আপনি ছেলে না মেয়ে? মেয়ে হলে আমাকে বিয়ে করে ফেলেন'
২) হাসান মাহবুব ভাই, Mahmudur Rahman Nahollex ভাই আমার উত্তরাধূনিক কবিতা পড়ে আমাকে ব্লক মেরে দিয়েছেন।
৩) মুহিত হাসান দিগন্ত আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে। জিজ্ঞেস করেছে আমি কে?
৪) বিখ্যাত ব্লগার আরিফ জেবতিকের (Arif ভাই) স্ট্যাটাসে একটা কমেন্ট করেছিলাম (বা কবিতা লিখেছিলাম)। সেখানে একটা সময় পর্যন্ত তার স্ট্যাটাসের লাইকের সংখ্যার চেয়ে আমার কবিতায় লাইকের সংখ্যা বেশি ছিলো।
৫) সিরিয়াস কবি মনে করে চ্যাটে আমার সাথে অনেকে সাহিত্য বিষয়ক গুরুগম্ভীর আলোচনা শুরুকরে দিতেন। উদাহারণঃ
- ভাই, কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে?
- মহান কবি গ্র্যাবুয়েসনের কবিতা পড়ে কবিতার লাইনে চলে এসেছি।
- গ্র্যাবুয়েসন কে?
- ইনি একজন রাশিয়ান কবি। সপ্তদশ শতকে রুশ সাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
- আপনিও অনেক ভালো লিখেন।
- আমার গুরু স্যার গ্র্যাবুয়েসনের তুলনায় তো কিছুই না।
- একদিন হতে পারবেন নিশ্চয় তার মতো।
- ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন। গ্র্যাবুয়েসন না হলেও যেনো ৎড়িঞটু হতে পারি।
- ইনি আবার কে?
- ইনি আজারবাইজানের একজন কবি। পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে...
৬) চ্যাট করতাম ছন্দে ছন্দে। উদাহারণ
: হু বুঝছি
কাউয়া: কী বুঝেছেন বলুন?/ বেলুন নাকি চালুন?
: আপ্নের সাথে কবিতা কইয়া কথা কইতে হবে নাকি?
: কবিতা হলে ক্ষতি কী?/তাতে ভিমরতী কী?
: নাহ সমস্যা নাই
: শুনতে লাগে ভালো/তোদের মাথায় চুল কতো গুনতে লাগে ভালো।
: আমার মন খারাপ
: কারণ?/ বলা বারণ?
৭) অনেকের প্রশ্ন ছিলো আমি কে? তাদেরকে জবাব দিতামঃ
'কবি কাউয়ায় কয়
কেউ যদি কবি হয়
লাগেনা তার পরিচয়'
****
আজ কালের মধ্যে নেট শেষ হয়ে যাবে। ৫/৬ মাসের জন্য আবার ডুব মারতে পারি। তাই ভাবলাম যাবার আগে কাউয়ার পরিচয় ফাঁস করে যাওয়া দরকার।
উত্তরাধূনিক কবি হিসেবে অনেকের সাথে ফাজলামী করেছি। তবে কারো সাথে বেয়াদবি করেছি বলে মনে হয় না। তারপরেও কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে সরি। কবি পদ থেকে অবসর নিচ্ছি। যাবার আগে কবি থাকাকালীন সময়ে লেখা কিছু কবিতা শেয়ার করে যাচ্ছি।
#
এসো ফুলকপি হয়ে যাই
অনেক তো হলো!
এই পটল জীবন আর কতো?
চলো -
একসাথে
এক কাতে
এক রাতে
জড়াজড়ি করে থাকি দুজন।
চুপ করে শুনি চলো হুতুম পেচার কূজন।
টুপটাপ শব্দে বয়ে যাই,
আর-
চলো ফুলকপি হয়ে যাই।
#
তোদের জন্য অভিমান
ধুম করে উলটে পড়ে দেয়ালের ছবিখান।
তোদের জন্য ভাল্লাগে
গলা ভরা রসগোল্লা অকারণে ঝাল লাগে।
তোদের জন্য কষ্ট হয়
মাথা ভরা ফুলকপি অসময়ে নষ্ট হয়।
#
তোদের মাথার উকুন
খায় মিলে শকুন।
শকুনের বাবা কে?
খাবে তাদের থাবা কে?
চিনিস তুই তাদের?
ওরে আবদুল কাদের।
#
তোরা আমায় করিস ব্লক?
রাখিস দূরে ফেসবুকে?
মনে রাখিস তোদের নামে দেবো আমি -
কেস ঠুকে।
আদালতে?
মোটেও না।
কাদালতে।
#
আমায় দেখে হাসতি কে?
আস্তিকে না নাস্তিকে।
আজকে হাসিস তোরা মিলে।
সাধু আর সব চোরা মিলে।
চুরার ঠাং-এ জুতা নাই
খালি ব্লাডার মুতা নাই।
থাকবে কী করে?
সবইতো তুলে রাখিস রক্ত মাখা শিখরে।
দেবো তোদের কান দিয়ে,
রক্ত ছোরা হান্দিয়ে।
ভালোমতো শান দিয়ে।
#
দেয়াল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে কাক
বাজে না বাজে না ঢোল
সাজে না সাজে না ঢাক।
তোমার ছাদের উপর ল্যাম্পপোস্ট আর কিট
তোমার আমার সবার মাথায়
হয়েছে শর্ট সার্কিট।
হেমলক বিষে আজ ভেজাল
মাছ ধরতে মাথায় নিবে কে জাল?
যাই হোক, উত্তরাধূনিক কবিতা এবং কবি - দুটাই সম্পুর্ণ আলাদা জিনিস। তাই ভাবলাম নিজ নামে না, ভিন্ন নাম এবং ভিন্ন স্বত্তা নিয়ে মাঠে নামবো।
ফেসবুক এবং ব্লগে নতুন আইডি খুললাম। নাম দিলাম একজন কাউয়া। ফ্রেন্ডলিস্টে এড করে নিলাম সব বিখ্যাত ব্লগার আর ফেসবুকারদেরকে। যাদেরকে রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারলাম না তাদের গ্রাহক হয়ে গেলাম।
শেষমেষ... এক অমবশ্যার রাত্রীতে বিসমিল্লাহ বলে কবিতা লেখা শুরু করলাম। প্রোফাইল করে দিলাম পাবলিক।
আমার কবিতায় মুগ্ধ হয়ে কিনা জানি না - অনেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো। সব এক্সেপ্ট করলাম। অনেকে ইনবক্স করলো 'কাউয়া ভাই, আপনার কবিতা আমার অনেক ভালো লাগে। প্লিইইইইইজ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টটা এক্সেপ্ট করুন।' 'আপনি তো ভাই দারুন লিখেন' 'ভাই চালিয়ে যান'...... এসব মেসেজ পড়ে আমার নয়ন আদ্র হলো।
কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর বেশ কিছু মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে। কয়েকটা বলা দরকার।
১) বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। প্রস্তাব দিয়েছেন ফারাবী শাফিউর রহমান। একদিন তিনি চ্যাটে বললেন - 'আপনি ছেলে না মেয়ে? মেয়ে হলে আমাকে বিয়ে করে ফেলেন'
২) হাসান মাহবুব ভাই, Mahmudur Rahman Nahollex ভাই আমার উত্তরাধূনিক কবিতা পড়ে আমাকে ব্লক মেরে দিয়েছেন।
৩) মুহিত হাসান দিগন্ত আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে। জিজ্ঞেস করেছে আমি কে?
৪) বিখ্যাত ব্লগার আরিফ জেবতিকের (Arif ভাই) স্ট্যাটাসে একটা কমেন্ট করেছিলাম (বা কবিতা লিখেছিলাম)। সেখানে একটা সময় পর্যন্ত তার স্ট্যাটাসের লাইকের সংখ্যার চেয়ে আমার কবিতায় লাইকের সংখ্যা বেশি ছিলো।
৫) সিরিয়াস কবি মনে করে চ্যাটে আমার সাথে অনেকে সাহিত্য বিষয়ক গুরুগম্ভীর আলোচনা শুরুকরে দিতেন। উদাহারণঃ
- ভাই, কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে?
- মহান কবি গ্র্যাবুয়েসনের কবিতা পড়ে কবিতার লাইনে চলে এসেছি।
- গ্র্যাবুয়েসন কে?
- ইনি একজন রাশিয়ান কবি। সপ্তদশ শতকে রুশ সাহিত্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
- আপনিও অনেক ভালো লিখেন।
- আমার গুরু স্যার গ্র্যাবুয়েসনের তুলনায় তো কিছুই না।
- একদিন হতে পারবেন নিশ্চয় তার মতো।
- ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন। গ্র্যাবুয়েসন না হলেও যেনো ৎড়িঞটু হতে পারি।
- ইনি আবার কে?
- ইনি আজারবাইজানের একজন কবি। পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে...
৬) চ্যাট করতাম ছন্দে ছন্দে। উদাহারণ
: হু বুঝছি
কাউয়া: কী বুঝেছেন বলুন?/ বেলুন নাকি চালুন?
: আপ্নের সাথে কবিতা কইয়া কথা কইতে হবে নাকি?
: কবিতা হলে ক্ষতি কী?/তাতে ভিমরতী কী?
: নাহ সমস্যা নাই
: শুনতে লাগে ভালো/তোদের মাথায় চুল কতো গুনতে লাগে ভালো।
: আমার মন খারাপ
: কারণ?/ বলা বারণ?
৭) অনেকের প্রশ্ন ছিলো আমি কে? তাদেরকে জবাব দিতামঃ
'কবি কাউয়ায় কয়
কেউ যদি কবি হয়
লাগেনা তার পরিচয়'
****
আজ কালের মধ্যে নেট শেষ হয়ে যাবে। ৫/৬ মাসের জন্য আবার ডুব মারতে পারি। তাই ভাবলাম যাবার আগে কাউয়ার পরিচয় ফাঁস করে যাওয়া দরকার।
উত্তরাধূনিক কবি হিসেবে অনেকের সাথে ফাজলামী করেছি। তবে কারো সাথে বেয়াদবি করেছি বলে মনে হয় না। তারপরেও কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে সরি। কবি পদ থেকে অবসর নিচ্ছি। যাবার আগে কবি থাকাকালীন সময়ে লেখা কিছু কবিতা শেয়ার করে যাচ্ছি।
#
এসো ফুলকপি হয়ে যাই
অনেক তো হলো!
এই পটল জীবন আর কতো?
চলো -
একসাথে
এক কাতে
এক রাতে
জড়াজড়ি করে থাকি দুজন।
চুপ করে শুনি চলো হুতুম পেচার কূজন।
টুপটাপ শব্দে বয়ে যাই,
আর-
চলো ফুলকপি হয়ে যাই।
#
তোদের জন্য অভিমান
ধুম করে উলটে পড়ে দেয়ালের ছবিখান।
তোদের জন্য ভাল্লাগে
গলা ভরা রসগোল্লা অকারণে ঝাল লাগে।
তোদের জন্য কষ্ট হয়
মাথা ভরা ফুলকপি অসময়ে নষ্ট হয়।
#
তোদের মাথার উকুন
খায় মিলে শকুন।
শকুনের বাবা কে?
খাবে তাদের থাবা কে?
চিনিস তুই তাদের?
ওরে আবদুল কাদের।
#
তোরা আমায় করিস ব্লক?
রাখিস দূরে ফেসবুকে?
মনে রাখিস তোদের নামে দেবো আমি -
কেস ঠুকে।
আদালতে?
মোটেও না।
কাদালতে।
#
আমায় দেখে হাসতি কে?
আস্তিকে না নাস্তিকে।
আজকে হাসিস তোরা মিলে।
সাধু আর সব চোরা মিলে।
চুরার ঠাং-এ জুতা নাই
খালি ব্লাডার মুতা নাই।
থাকবে কী করে?
সবইতো তুলে রাখিস রক্ত মাখা শিখরে।
দেবো তোদের কান দিয়ে,
রক্ত ছোরা হান্দিয়ে।
ভালোমতো শান দিয়ে।
#
দেয়াল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে কাক
বাজে না বাজে না ঢোল
সাজে না সাজে না ঢাক।
তোমার ছাদের উপর ল্যাম্পপোস্ট আর কিট
তোমার আমার সবার মাথায়
হয়েছে শর্ট সার্কিট।
হেমলক বিষে আজ ভেজাল
মাছ ধরতে মাথায় নিবে কে জাল?
ওয়ার্ডপ্রেস এ আসুন। আমাদের আড্ডা চলবে আরো বেশ!
উত্তরমুছুনআমি ব্লগারের ফ্যান :)
মুছুন