অনেক বাণীই তো দেন রাজনীতিবিদেরা। সব কি তাঁদের মনের কথা? জি না। বেশির ভাগ
সময় তাঁরা মুখে বলেন এক কথা, মনে থাকে আরেক কথা। উদাহরণ দিচ্ছেন আলিম আল
রাজি
প্রসঙ্গ: হরতাল এবং আন্দোলন
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
তারা হরতাল দিতে চাচ্ছে, দিক। কিন্তু জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি বরদাশত করা হবে না। যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে দমন করা হবে। রাজপথে পুলিশ-র্যাবসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। কোথাও কোনো নাশকতা ঘটলে তারা সেটা মোকাবিলা করতে পিছপা হবে না।
মনে মনে যা বলেন
রাস্তায় নামুক। কত সবজিতে কত রুল সেটা রুলারের কয়েকটা বাড়ি খেলে টের পাবে। গতবার আমাদের তারা কেমন মেরেছিল, মনে আছে? এখনো অমাবস্যার রাতে আমাদের কোমরে ব্যথা করে। কিছুই ভুলিনি।
রাজপথে পুলিশ-র্যাবসহ ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটাসহ উপস্থিত থাকবে। বিরোধী দলের নেতাদের দেখামাত্র তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে।
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
হরতাল আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ দেশের জনগণও এখন হরতাল চায়। এ সরকারকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। এক মুহূর্তও আর কেউ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আমরা হরতাল করব। রাজপথে নামব। যদি বাধা আসে তবে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
মনে মনে যা বলেন
রাখেন আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। সবাই বলে আমরা নাকি দুর্বল বিরোধী দল। হরতাল-ফরতাল ডাকতে পারি না। তাই হরতাল ডেকেই ফেললাম। জনগণের গুষ্টি কিলাই। দু-একজন মরলে কী হয়? গণতন্ত্রের স্বার্থে দু-একজন বলি হতেই পারে! গণতন্ত্রটাই আসল। পুলিশ বাধা দিলে আমাদের নারী নেত্রীরা টিভি ক্যামেরার সামনে গিয়ে বিচার দেবে। হু। বলে দিলাম কিন্তু।
প্রসঙ্গ: সমঝোতা
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
আমরা বিশ্বাস করি, বিরোধী দলও সরকারের অংশ। দেশ পরিচালনায় তাদের অংশগ্রহণের দরকার আছে। তাদের দলে অনেক প্রবীণ নেতা আছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতাও অনেক।
দেশ পরিচালনায় আমরা তাঁদের সাহায্য নিতে চাই। আসুন একসঙ্গে কাজ করি।
মনে মনে যা বলেন
অ্যাহ্! আসছে আমার বিরোধী দল। দেশ পরিচালনায় তাদের সাহায্যের কী দরকার? আমাদের মাথায় কি ঘিলুসংকট নাকি? তেনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, আমাদের তো তখন পাত্তা দেননি। একা একা চলেছেন। লুটেপুটে খেয়েছেন। আমরা রাস্তায় নামলে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দিয়েছেন। আমরা একাই দেশ চালাব। আমাদের জন্য কবিগুরু বলেছেন, ‘দেশ একলা চালাও একলা চালাও একলা চালাও রে!’
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা জনগণের দল। আমরা যখন সরকারি দলে ছিলাম, তখন দেশের জন্য কাজ করেছি। এখন বিরোধী দলে এসেও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। যেকোনো কাজে সরকারকে সাহায্য করতে প্রস্তুত আমরা।
ক্ষমতাসীন দলের সদিচ্ছাটাই এখানে আসল। তাঁরা আলোচনার জন্য ডাকলে আমরা অবশ্যই যাব।
মনে মনে যা বলেন
হু। আমরা সরকারি দলের হয়ে কাজ করতে চাই। মনেপ্রাণে চাই। পাঁচ বছর বসে বসে ঘোড়ার ঘাস কাটতে কারই বা ইচ্ছা হয়। কিন্তু কথা হলো, সরকারের সঙ্গে কাজ করলে পার্সেন্টেজটা কেমন হবে? যেমন রেল থেকে এক কোটি টাকা চুরি করলাম।
এ ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রী কত পাবেন আর আমাদের দলের লোকজন কত পাবে? এ ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে হবে। ন্যায্য ভাগাভাগি ছাড়া আমরা কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি না। কারণ বইতে পড়েছি—ন্যায্য ভাগাভাগি না করা ভীষণ অন্যায়। আমরা কোনো অন্যায়কারীর সঙ্গে কাজ করতে চাই না। আমরা নীতিমান দলের নীতিমান নেতা। পার্সেন্টেজের নিশ্চয়তা দিয়ে ডাকা হোক, আমরা সরকারের ডাকে সাড়া দেবই দেব।
প্রসঙ্গ: নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি তীব্র শোক প্রকাশ করছি। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ ধরনের নাশকতা বরদাশত করা হবে না।
মনে মনে যা বলেন
কী বিপদে পড়া গেল। কোনোমতে পাঁচটা বছর কেটে যাবে, তা না। এইখানে ঝামেলা, ওইখানে ঝামেলা! সমস্যা হলো, সাংবাদিকেরা এইটা নিয়া এখন তো হাউকাউ করবে। অবশ্য কিছুদিন গেলে তারাও ভুলে যাবে। ভুলে না গেলে তাদের হাতে নতুন কোনো ইস্যু ধরিয়ে দিলেই চলবে। আর দেশের মানুষও খুব দ্রুত সব ভুলে যাবে। এ দেশের সংগ্রামী মেহনতি জনতা আসলে বেশ ভালো। খুব দ্রুত সব ভুলে যায়। না হলে রাজনীতিবিদদের যে কী হতো!
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
এ ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। বর্তমান সরকার যে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ, সেটাই ফুটে উঠেছে এ ঘটনার মাধ্যমে। সরকারের উচিত এখনই পদত্যাগ করা, মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে জয়ীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। ব্যর্থ সরকারের সঙ্গে আর জনগণ নেই। তারা সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এক মুহূর্ত সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
মনে মনে যা বলেন
ইয়াহু! আরেকটা নাশকতা ঘটেছে। সরকারের আরেকটু বারোটা বাজল। ক্ষমতায় আছো, এখন বোঝো ঠ্যালা। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন কি এ রকম ঘটনা কম ঘটত? বরং বেশিই ঘটত। তখন তো খুব চিল্লাচিল্লি করতা। এখন টের পাও। যা-ই হোক, এই সরকারের উচিত আমাদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। মধ্যবর্তী নির্বাচন-টির্বাচন লাগবে না। আমরা ক্ষমতা পেলেই হলো।
রস আলো: ০৭-০৫-২০১২
প্রসঙ্গ: হরতাল এবং আন্দোলন
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
তারা হরতাল দিতে চাচ্ছে, দিক। কিন্তু জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি বরদাশত করা হবে না। যেকোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে দমন করা হবে। রাজপথে পুলিশ-র্যাবসহ বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। কোথাও কোনো নাশকতা ঘটলে তারা সেটা মোকাবিলা করতে পিছপা হবে না।
মনে মনে যা বলেন
রাস্তায় নামুক। কত সবজিতে কত রুল সেটা রুলারের কয়েকটা বাড়ি খেলে টের পাবে। গতবার আমাদের তারা কেমন মেরেছিল, মনে আছে? এখনো অমাবস্যার রাতে আমাদের কোমরে ব্যথা করে। কিছুই ভুলিনি।
রাজপথে পুলিশ-র্যাবসহ ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটাসহ উপস্থিত থাকবে। বিরোধী দলের নেতাদের দেখামাত্র তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে।
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
হরতাল আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ দেশের জনগণও এখন হরতাল চায়। এ সরকারকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। এক মুহূর্তও আর কেউ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আমরা হরতাল করব। রাজপথে নামব। যদি বাধা আসে তবে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
মনে মনে যা বলেন
রাখেন আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। সবাই বলে আমরা নাকি দুর্বল বিরোধী দল। হরতাল-ফরতাল ডাকতে পারি না। তাই হরতাল ডেকেই ফেললাম। জনগণের গুষ্টি কিলাই। দু-একজন মরলে কী হয়? গণতন্ত্রের স্বার্থে দু-একজন বলি হতেই পারে! গণতন্ত্রটাই আসল। পুলিশ বাধা দিলে আমাদের নারী নেত্রীরা টিভি ক্যামেরার সামনে গিয়ে বিচার দেবে। হু। বলে দিলাম কিন্তু।
প্রসঙ্গ: সমঝোতা
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
আমরা বিশ্বাস করি, বিরোধী দলও সরকারের অংশ। দেশ পরিচালনায় তাদের অংশগ্রহণের দরকার আছে। তাদের দলে অনেক প্রবীণ নেতা আছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতাও অনেক।
দেশ পরিচালনায় আমরা তাঁদের সাহায্য নিতে চাই। আসুন একসঙ্গে কাজ করি।
মনে মনে যা বলেন
অ্যাহ্! আসছে আমার বিরোধী দল। দেশ পরিচালনায় তাদের সাহায্যের কী দরকার? আমাদের মাথায় কি ঘিলুসংকট নাকি? তেনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, আমাদের তো তখন পাত্তা দেননি। একা একা চলেছেন। লুটেপুটে খেয়েছেন। আমরা রাস্তায় নামলে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দিয়েছেন। আমরা একাই দেশ চালাব। আমাদের জন্য কবিগুরু বলেছেন, ‘দেশ একলা চালাও একলা চালাও একলা চালাও রে!’
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা জনগণের দল। আমরা যখন সরকারি দলে ছিলাম, তখন দেশের জন্য কাজ করেছি। এখন বিরোধী দলে এসেও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। যেকোনো কাজে সরকারকে সাহায্য করতে প্রস্তুত আমরা।
ক্ষমতাসীন দলের সদিচ্ছাটাই এখানে আসল। তাঁরা আলোচনার জন্য ডাকলে আমরা অবশ্যই যাব।
মনে মনে যা বলেন
হু। আমরা সরকারি দলের হয়ে কাজ করতে চাই। মনেপ্রাণে চাই। পাঁচ বছর বসে বসে ঘোড়ার ঘাস কাটতে কারই বা ইচ্ছা হয়। কিন্তু কথা হলো, সরকারের সঙ্গে কাজ করলে পার্সেন্টেজটা কেমন হবে? যেমন রেল থেকে এক কোটি টাকা চুরি করলাম।
এ ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রী কত পাবেন আর আমাদের দলের লোকজন কত পাবে? এ ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে হবে। ন্যায্য ভাগাভাগি ছাড়া আমরা কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি না। কারণ বইতে পড়েছি—ন্যায্য ভাগাভাগি না করা ভীষণ অন্যায়। আমরা কোনো অন্যায়কারীর সঙ্গে কাজ করতে চাই না। আমরা নীতিমান দলের নীতিমান নেতা। পার্সেন্টেজের নিশ্চয়তা দিয়ে ডাকা হোক, আমরা সরকারের ডাকে সাড়া দেবই দেব।
প্রসঙ্গ: নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড
সরকারি দলের নেতা মুখে যা বলেন
এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি তীব্র শোক প্রকাশ করছি। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ ধরনের নাশকতা বরদাশত করা হবে না।
মনে মনে যা বলেন
কী বিপদে পড়া গেল। কোনোমতে পাঁচটা বছর কেটে যাবে, তা না। এইখানে ঝামেলা, ওইখানে ঝামেলা! সমস্যা হলো, সাংবাদিকেরা এইটা নিয়া এখন তো হাউকাউ করবে। অবশ্য কিছুদিন গেলে তারাও ভুলে যাবে। ভুলে না গেলে তাদের হাতে নতুন কোনো ইস্যু ধরিয়ে দিলেই চলবে। আর দেশের মানুষও খুব দ্রুত সব ভুলে যাবে। এ দেশের সংগ্রামী মেহনতি জনতা আসলে বেশ ভালো। খুব দ্রুত সব ভুলে যায়। না হলে রাজনীতিবিদদের যে কী হতো!
বিরোধী দলের নেতা মুখে যা বলেন
এ ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। বর্তমান সরকার যে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ, সেটাই ফুটে উঠেছে এ ঘটনার মাধ্যমে। সরকারের উচিত এখনই পদত্যাগ করা, মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে জয়ীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। ব্যর্থ সরকারের সঙ্গে আর জনগণ নেই। তারা সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এক মুহূর্ত সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
মনে মনে যা বলেন
ইয়াহু! আরেকটা নাশকতা ঘটেছে। সরকারের আরেকটু বারোটা বাজল। ক্ষমতায় আছো, এখন বোঝো ঠ্যালা। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন কি এ রকম ঘটনা কম ঘটত? বরং বেশিই ঘটত। তখন তো খুব চিল্লাচিল্লি করতা। এখন টের পাও। যা-ই হোক, এই সরকারের উচিত আমাদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। মধ্যবর্তী নির্বাচন-টির্বাচন লাগবে না। আমরা ক্ষমতা পেলেই হলো।
রস আলো: ০৭-০৫-২০১২
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।