আবুল হাসনাত সুজন একটি লেখা লিখেছেন[১]। নোটটি একই সাথে এলিট ব্লগ
সচলায়তনেও প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত নোট নিয়ে আমার কিছু কথা বলার আছে। কথাগুলো
বলতে আমি এই নোটটা লিখলাম। এই নাদানের লেখা সচলায়তনে প্রকাশ হওয়ার সম্ভবনা
নেই। তাই আপাতত ফেসবুকই ভরসা।
প্রথমেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে হাসনাত যে নোটটি লিখেছেন তার প্রতিটা লাইনই সত্য। তাহলে আমার আপত্তিটা কোন যায়গায়? জবাব দিচ্ছি।
হাসনাত সত্য বললেও কিছু গুরুতর সত্যকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। নবীজি বলেছেন, সত্য যতো কঠিনই হোক প্রকাশ করো। হাসনাত তা করেন নি।
তিনি তার নোটের শেষে বলেছেন যে আমি সিগারেট খেয়েছি। তিনি সিগারেট খাওয়ার আগ পিছের কিছু কাহীনিও বর্ণনা করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনার অংশ হিসেবে আমি জানি যে সব ঘটনা তিনি বলেন নি। কিন্তু বলাটা দরকার ছিলো। তিনি যেহেতু বলেননি তাই নিজ দায়ীত্ব থেকেই আমি সেগুলো এখন বলবো।
দুপুর দেড়টা। কলেজ থেকে একটু তাড়াতাড়িই চলে এসেছি। বিছানায় হেলান দিয়ে ডিস্কোভারি দেখছি। চলছে curiosity: why is sex fun. বলা বাহুল্য আমি খুব মনযোগ দিয়ে শো-টা দেখছি। আমার মনযোগে ব্যাঘাত ঘটিয়ে হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো। হাসনাতের ফোন। মোটা গলায় তিনি বললেন, তুই কই?
আমি বললাম, - বাসায়। তুই কই?
- জিন্দাবাজার আছি। তুই বাসায় থাক। আসতেছি।
- আয়। খাবার রেডি আছে। আমিও খাইনি এখনো।
তিনি "ওকে" বলে রাখলেন।
জিন্দাবাজার থেকে আমার বাসায় আসতে লাগে বড়জোর ১৫ মিনিট। কিন্তু হাসনাত টিপিকাল বাঙ্গালীর মতোই ১৫ মিনিটের রাস্তা আসলেন ৪৫ মিনিটে।
যাই হোক, বিমর্ষ বদনে তিনি আমার রুমে ঢুকলেন। আমি বললাম,
- কী হে বালক? বদন বিমর্ষ কেনো?
তিনি জবাব দিলেন, - উউউ।
আমি আমার জিজ্ঞেস করলাম, - 'উ' কী?
- উউউ।
- মানে কী?
- উউউ।
আমি তাঁকে আর না ঘাটিয়ে বললাম, - উউউ কর। আমি দেখি খাওয়ার কী অবস্থা।
খাওয়া দাওয়া শেষ হলো। আমার পিসির সামনে বসলেন হাসনাত। মুখে যথেষ্ট দুঃখ দুঃখ ভাব এনে বললেন
- তোর হার্ড ডিস্কে বিরহের গান টান নেই?
- আছে তো! খোঁজে দেখ। কী করবি?
- আমার কথার জবাব না দিয়ে সে দুঃখের গান প্ল্যা করলো। একে একে চলতে থাকলো "যদি বারণও করো তবে গাহিব না", "তুই ফেলেছিস কারে", "আমার সকল দুঃখের প্রদীপ"
প্ল্যা লিস্ট শুনে আমি মনে মনে ভাবলাম "খাইছে রে"। জিজ্ঞেস করলাম,
- ঐ ঘটনা কী তোর?
- 'ব্রেক আপ করে ফেলেছি।' মরা গলায় জবাব দিলেন হাসনাত।
- কস কী!
- উউউ।
- কী সর্বনাশ!
- তোর সর্বনাশের কী হইলো? চোখ পিট পিট করে তাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হাসনাত।
- 'সর্বনাশ যা হবার আমারই হয়েছে।' আমি উদ্দিগ্ন কন্ঠে জবাব দিলাম
- মানে?
- মানে কিছু না। চল তোর ব্রেক আপ সেলিব্রেট করি।
- ক্যামনে?
আমি তুড়ি মেরে বললাম, - চল শাহজালাল ভার্সিটি থেকে ঘুরে আসি।
এর পর কী হলো সেটা হাসনাতের নোটেই বলা আছে। আমি বলে আর এই নোটের দৈর্ঘ্য বাড়াচ্ছি না।
এখন আসি সিগারেট প্রসঙ্গে।
পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটু ফ্ল্যাশ ব্যাকে যাচ্ছি। বছরখানেক আগের ঘটনা। একজনের সাথে আমার হৃদয়ঘটিত কিছু ব্যাপার চলছিলো। কিন্তু তিনি আমাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আরেকজনের সাথে চলে গেলেন। সোজা বাংলায় বললে বলতে হয় আমি কঠিন একটা ছ্যাকা খেলাম।
ব্যাপারটা যতো হালকাভাবে বলছি আসলে সেটা সেরকম ছিলো না। বরং যতো সহজভাবে বললাম তার চেয়ে শতগুন বেশি কঠিন ছিলো। বিস্তারিত কাহীনি আরেকদিন না হয় বলা যাবে।
যাই হোক, ছ্যাকা খেয়ে আমি আক্ষরিক অর্থেই 'ভেঙ্গে পড়লাম'। ভেঙ্গে পড়াটা সেলিব্রেট করতে ভাবলাম কিছু একটা করা দরকার। মানুষ ধোয়া পান করে, পানীয় পান করে। আমি চিন্তা করলাম আমিও ওরকম কিছু করবো। প্রথম পদক্ষেপেই "পানীয়" নেয়াটা ঠিক হবে না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ধোয়া নেবো।
আমি পকেটে ২০ টাকা নিয়ে বেনসন কেনার উদ্দেশ্যে দোকানে গেলাম। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম এই জিনিশ খাওয়া তো দুরের কথা, কেনাও আমার দ্বারা সম্ভব না। আসলেই সম্ভব না।
কিন্তু কিছু একটা তো খাওয়া দরকার। না হোক সেটা "গ্যাসিয় পদার্থ"। অন্য কিছু তো খাওয়া যেতে পারে। সিদ্ধান্ত নিলাম কঠিন পদার্থ খাবো। আমি ২০ টাকা দিয়ে ১০ টা সেন্টার ফ্রেশ কিনে নিয়ে আসলাম।
তারপরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত। আমি একটার পর একটা সেন্টার ফ্রেশ খাই। আর চোখ বন্ধ করে ছ্যাকার ফিল আনার চেষ্টা করি।
ফ্ল্যাশ ব্যাক শেষ। এখন আসি মুল ঘটনায়।
আমি আর হাসনাত শাবি ক্যাম্পাসে গেলাম। অনেক ঘুরাঘুরি করলাম। হাসনাত প্রস্তাব দিলো গ্যাসিয় পদার্থ খাওয়া যেতে পারে। অন্য দিন হলে আমি আপত্তি করতাম কিন্তু সেদিন করলাম না। বেচারি আজকেই মাত্র ছ্যাকা খেলো। আজকে সিগারেট না খেলে কবে খাবে? তাছাড়া তার ছ্যাকার কারনে আমার নিজের মন টনও খারাপ।
এখন আমার মন খারাপের কারণটা বলি।
হাসনাতের "এক্স" এর অতি সুন্দরী একটা বোন আছে। হাসনাতের এই 'সাবেক হবু শালি'র সাথে আমার 'কিছু একটা' হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিলো প্রচুর। আমি আর হাসনাতের 'সাবেক হবু শালি' অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসনাত সাহেব ব্রেক আপ করে ফেলায় ঝামেলা সৃষ্টি হলো। তার 'শালি'র সাথে আমার অগ্রগতির কোন সম্ভবনাই আর থাকলো না। আমি একা হয়ে গেলাম। তার শালি কলেজে যাবে, ওড়না দুলিয়ে হাটবে। কেউ না কেউ তাঁকে রোমান্টিক মেসেজ পাঠাবে। সে আনসার দিবে। রাতে ফুসুর ফাসুর আলাপ করবে ফোনে। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারবো না। শুধু রবি বাবুর লেখা গান শুনবো, "গধুলী গগনে মেঘে ঢেকেছিলো তাঁরা... আমার যা কথা ছিলো হয়ে গেলো সারা..."
এই যখন মানষিক অবস্থা তখন ভাবলাম গ্যাসিয় পদার্থ নিলে খারাপ হয় না।
বেনসন কিনলাম দুইটা। সন্ধ্যা সাতটা বেজে দুই মিনিট। চারদিকে উথাল পাতাল জোসনা। আমরা সিগারেট ধরালাম। ফুসফুসে অতি যত্নে পাঠিয়ে দিলাম কিছু নিকোটিন। আমাদের ফুসফুস প্রথম বারের মতো নিকোটিনের স্বাধ পেলো। তাঁর সাক্ষী হয়ে থাকলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট বড় মাঠ আর পুর্ণিমার একটা পুর্ণ চাঁদ। আমি ভাবলাম কোন রমনীকেও এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষি হিসেবে রাখলে খারাপ হয় না। সৃষ্টিকর্তা আমার মনের কথা বুঝতে পারলেন। রিক্সা করে কোথা থেকে অতি সুন্দরী এক রমনী এসে উদয় হলেন। আমি তাঁকে দেখিয়ে আরো দুইটা টান দিলাম। রমনী মুখ বাকা করলেন এবং অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলেন। গোল্লায় যাওয়া ছেলেদের তিনি পছন্দ করেন না।
নিজের ব্রেক আপের পরে যে রাজি সিগারেট খায়নি খেয়েছিলো চুইং গাম, হাসনাতের ব্রেক আপের দিন সেই রাজি ঠিকই প্রথম বারের মতো সিগারেট খেয়েছিলো। খেয়েছিলেন হাসনাতও।
এই হলো ইতিহাস। প্রনয়ের ইতিহাস, নিকোটিনের ইতিহাস। কিন্তু আবুল হাসনাত সুজন তাঁর লেখায় অতি যত্নে প্রনয়ের ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। জাতিকে সেই ইতিহাস জানাতেই আমার এই নোট। বিদায়।
* বি দ্রঃ গতকাল ছিলো আবুল হাসনাতের সুজনের জন্মদিন। আমি সাধারণত তাঁকে জন্মদিনে উইশ করি না। এবার ভেবেছিলাম উইশ না করে এই নোটটা পাবলিশ করে সত্য ইতিহাস তুলে ধরবো। কিন্তু ইলেকট্রিসিটি সব প্যাচ লাগিয়ে দিলো। একদিন দেরিতে তাই সত্য প্রকাশ করা হলো।
প্রথমেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে হাসনাত যে নোটটি লিখেছেন তার প্রতিটা লাইনই সত্য। তাহলে আমার আপত্তিটা কোন যায়গায়? জবাব দিচ্ছি।
হাসনাত সত্য বললেও কিছু গুরুতর সত্যকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। নবীজি বলেছেন, সত্য যতো কঠিনই হোক প্রকাশ করো। হাসনাত তা করেন নি।
তিনি তার নোটের শেষে বলেছেন যে আমি সিগারেট খেয়েছি। তিনি সিগারেট খাওয়ার আগ পিছের কিছু কাহীনিও বর্ণনা করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনার অংশ হিসেবে আমি জানি যে সব ঘটনা তিনি বলেন নি। কিন্তু বলাটা দরকার ছিলো। তিনি যেহেতু বলেননি তাই নিজ দায়ীত্ব থেকেই আমি সেগুলো এখন বলবো।
দুপুর দেড়টা। কলেজ থেকে একটু তাড়াতাড়িই চলে এসেছি। বিছানায় হেলান দিয়ে ডিস্কোভারি দেখছি। চলছে curiosity: why is sex fun. বলা বাহুল্য আমি খুব মনযোগ দিয়ে শো-টা দেখছি। আমার মনযোগে ব্যাঘাত ঘটিয়ে হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো। হাসনাতের ফোন। মোটা গলায় তিনি বললেন, তুই কই?
আমি বললাম, - বাসায়। তুই কই?
- জিন্দাবাজার আছি। তুই বাসায় থাক। আসতেছি।
- আয়। খাবার রেডি আছে। আমিও খাইনি এখনো।
তিনি "ওকে" বলে রাখলেন।
জিন্দাবাজার থেকে আমার বাসায় আসতে লাগে বড়জোর ১৫ মিনিট। কিন্তু হাসনাত টিপিকাল বাঙ্গালীর মতোই ১৫ মিনিটের রাস্তা আসলেন ৪৫ মিনিটে।
যাই হোক, বিমর্ষ বদনে তিনি আমার রুমে ঢুকলেন। আমি বললাম,
- কী হে বালক? বদন বিমর্ষ কেনো?
তিনি জবাব দিলেন, - উউউ।
আমি আমার জিজ্ঞেস করলাম, - 'উ' কী?
- উউউ।
- মানে কী?
- উউউ।
আমি তাঁকে আর না ঘাটিয়ে বললাম, - উউউ কর। আমি দেখি খাওয়ার কী অবস্থা।
খাওয়া দাওয়া শেষ হলো। আমার পিসির সামনে বসলেন হাসনাত। মুখে যথেষ্ট দুঃখ দুঃখ ভাব এনে বললেন
- তোর হার্ড ডিস্কে বিরহের গান টান নেই?
- আছে তো! খোঁজে দেখ। কী করবি?
- আমার কথার জবাব না দিয়ে সে দুঃখের গান প্ল্যা করলো। একে একে চলতে থাকলো "যদি বারণও করো তবে গাহিব না", "তুই ফেলেছিস কারে", "আমার সকল দুঃখের প্রদীপ"
প্ল্যা লিস্ট শুনে আমি মনে মনে ভাবলাম "খাইছে রে"। জিজ্ঞেস করলাম,
- ঐ ঘটনা কী তোর?
- 'ব্রেক আপ করে ফেলেছি।' মরা গলায় জবাব দিলেন হাসনাত।
- কস কী!
- উউউ।
- কী সর্বনাশ!
- তোর সর্বনাশের কী হইলো? চোখ পিট পিট করে তাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হাসনাত।
- 'সর্বনাশ যা হবার আমারই হয়েছে।' আমি উদ্দিগ্ন কন্ঠে জবাব দিলাম
- মানে?
- মানে কিছু না। চল তোর ব্রেক আপ সেলিব্রেট করি।
- ক্যামনে?
আমি তুড়ি মেরে বললাম, - চল শাহজালাল ভার্সিটি থেকে ঘুরে আসি।
এর পর কী হলো সেটা হাসনাতের নোটেই বলা আছে। আমি বলে আর এই নোটের দৈর্ঘ্য বাড়াচ্ছি না।
এখন আসি সিগারেট প্রসঙ্গে।
পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটু ফ্ল্যাশ ব্যাকে যাচ্ছি। বছরখানেক আগের ঘটনা। একজনের সাথে আমার হৃদয়ঘটিত কিছু ব্যাপার চলছিলো। কিন্তু তিনি আমাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আরেকজনের সাথে চলে গেলেন। সোজা বাংলায় বললে বলতে হয় আমি কঠিন একটা ছ্যাকা খেলাম।
ব্যাপারটা যতো হালকাভাবে বলছি আসলে সেটা সেরকম ছিলো না। বরং যতো সহজভাবে বললাম তার চেয়ে শতগুন বেশি কঠিন ছিলো। বিস্তারিত কাহীনি আরেকদিন না হয় বলা যাবে।
যাই হোক, ছ্যাকা খেয়ে আমি আক্ষরিক অর্থেই 'ভেঙ্গে পড়লাম'। ভেঙ্গে পড়াটা সেলিব্রেট করতে ভাবলাম কিছু একটা করা দরকার। মানুষ ধোয়া পান করে, পানীয় পান করে। আমি চিন্তা করলাম আমিও ওরকম কিছু করবো। প্রথম পদক্ষেপেই "পানীয়" নেয়াটা ঠিক হবে না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ধোয়া নেবো।
আমি পকেটে ২০ টাকা নিয়ে বেনসন কেনার উদ্দেশ্যে দোকানে গেলাম। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম এই জিনিশ খাওয়া তো দুরের কথা, কেনাও আমার দ্বারা সম্ভব না। আসলেই সম্ভব না।
কিন্তু কিছু একটা তো খাওয়া দরকার। না হোক সেটা "গ্যাসিয় পদার্থ"। অন্য কিছু তো খাওয়া যেতে পারে। সিদ্ধান্ত নিলাম কঠিন পদার্থ খাবো। আমি ২০ টাকা দিয়ে ১০ টা সেন্টার ফ্রেশ কিনে নিয়ে আসলাম।
তারপরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত। আমি একটার পর একটা সেন্টার ফ্রেশ খাই। আর চোখ বন্ধ করে ছ্যাকার ফিল আনার চেষ্টা করি।
ফ্ল্যাশ ব্যাক শেষ। এখন আসি মুল ঘটনায়।
আমি আর হাসনাত শাবি ক্যাম্পাসে গেলাম। অনেক ঘুরাঘুরি করলাম। হাসনাত প্রস্তাব দিলো গ্যাসিয় পদার্থ খাওয়া যেতে পারে। অন্য দিন হলে আমি আপত্তি করতাম কিন্তু সেদিন করলাম না। বেচারি আজকেই মাত্র ছ্যাকা খেলো। আজকে সিগারেট না খেলে কবে খাবে? তাছাড়া তার ছ্যাকার কারনে আমার নিজের মন টনও খারাপ।
এখন আমার মন খারাপের কারণটা বলি।
হাসনাতের "এক্স" এর অতি সুন্দরী একটা বোন আছে। হাসনাতের এই 'সাবেক হবু শালি'র সাথে আমার 'কিছু একটা' হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিলো প্রচুর। আমি আর হাসনাতের 'সাবেক হবু শালি' অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসনাত সাহেব ব্রেক আপ করে ফেলায় ঝামেলা সৃষ্টি হলো। তার 'শালি'র সাথে আমার অগ্রগতির কোন সম্ভবনাই আর থাকলো না। আমি একা হয়ে গেলাম। তার শালি কলেজে যাবে, ওড়না দুলিয়ে হাটবে। কেউ না কেউ তাঁকে রোমান্টিক মেসেজ পাঠাবে। সে আনসার দিবে। রাতে ফুসুর ফাসুর আলাপ করবে ফোনে। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারবো না। শুধু রবি বাবুর লেখা গান শুনবো, "গধুলী গগনে মেঘে ঢেকেছিলো তাঁরা... আমার যা কথা ছিলো হয়ে গেলো সারা..."
এই যখন মানষিক অবস্থা তখন ভাবলাম গ্যাসিয় পদার্থ নিলে খারাপ হয় না।
বেনসন কিনলাম দুইটা। সন্ধ্যা সাতটা বেজে দুই মিনিট। চারদিকে উথাল পাতাল জোসনা। আমরা সিগারেট ধরালাম। ফুসফুসে অতি যত্নে পাঠিয়ে দিলাম কিছু নিকোটিন। আমাদের ফুসফুস প্রথম বারের মতো নিকোটিনের স্বাধ পেলো। তাঁর সাক্ষী হয়ে থাকলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট বড় মাঠ আর পুর্ণিমার একটা পুর্ণ চাঁদ। আমি ভাবলাম কোন রমনীকেও এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষি হিসেবে রাখলে খারাপ হয় না। সৃষ্টিকর্তা আমার মনের কথা বুঝতে পারলেন। রিক্সা করে কোথা থেকে অতি সুন্দরী এক রমনী এসে উদয় হলেন। আমি তাঁকে দেখিয়ে আরো দুইটা টান দিলাম। রমনী মুখ বাকা করলেন এবং অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নিলেন। গোল্লায় যাওয়া ছেলেদের তিনি পছন্দ করেন না।
নিজের ব্রেক আপের পরে যে রাজি সিগারেট খায়নি খেয়েছিলো চুইং গাম, হাসনাতের ব্রেক আপের দিন সেই রাজি ঠিকই প্রথম বারের মতো সিগারেট খেয়েছিলো। খেয়েছিলেন হাসনাতও।
এই হলো ইতিহাস। প্রনয়ের ইতিহাস, নিকোটিনের ইতিহাস। কিন্তু আবুল হাসনাত সুজন তাঁর লেখায় অতি যত্নে প্রনয়ের ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। জাতিকে সেই ইতিহাস জানাতেই আমার এই নোট। বিদায়।
* বি দ্রঃ গতকাল ছিলো আবুল হাসনাতের সুজনের জন্মদিন। আমি সাধারণত তাঁকে জন্মদিনে উইশ করি না। এবার ভেবেছিলাম উইশ না করে এই নোটটা পাবলিশ করে সত্য ইতিহাস তুলে ধরবো। কিন্তু ইলেকট্রিসিটি সব প্যাচ লাগিয়ে দিলো। একদিন দেরিতে তাই সত্য প্রকাশ করা হলো।
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।