বইমেলায় যদি তরুণ লেখক রবীন্দ্রনাথের প্রথম বই গীতাঞ্জলি প্রকাশিত হতো, তাহলে কী কী ঘটত? জানাচ্ছেন আলিম আল রাজি
বই প্রকাশ
গীতাঞ্জলি তো লেখা হলো। কিন্তু প্রকাশ করবে কে? বিরাট চিন্তায় পড়ে যেতেন রবীন্দ্রনাথ। বিভিন্ন প্রকাশকের কাছে গিয়েও খুব একটা পাত্তা পেতেন না তিনি। প্রকাশকেরা নাক-মুখ কুঁচকে বলতেন, ‘লম্বা দাড়ি রেখেছেন ভালো কথা। কিন্তু তার পরও আপনি তরুণ লেখক। কে কিনবে আপনার বই? সরি, আমি রিস্ক নিতে পারব না। আপনার বই প্রকাশ করা যাবে না।’
অগত্যা প্রকাশককে পকেট থেকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতেন রবি বাবু। বইমেলায় আসত ৩০০ কপি গীতাঞ্জলি।
বিজ্ঞাপন
নতুন লেখক, কেউ চেনে-টেনে না। কে কিনবে রবির বই? তাই পত্রিকায় রাবীন্দ্রিক ভাষায় বইয়ের বিজ্ঞাপন দিতেন রবীন্দ্রনাথ: ‘ওরে সবুজ, ওরে কাঁচা, এবারের পুস্তক মেলায় আসিয়াছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নতুন পুস্তিকা গীতাঞ্জলি। পুস্তকখানা ক্রয় করিবার আশ হইলে মেলার ভানুসিংহ প্রকাশনীর স্টলে খোঁজ করিবেন।’
ফেসবুকে প্রচারণা
ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথের একটি অ্যাকাউন্ট থাকত ‘ড্যাশিং রবি’ নামে। ওটা দিয়ে তুমুল প্রচারণা চালাতেন রবি বাবু। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদের ছবি দিয়ে রাখতেন তিনি।
বই নিয়ে খুলতেন ফেসবুক পেজ, গ্রুপ ইত্যাদি। অন্যান্য ফেক অ্যাকাউন্ট থেকেও প্রচারণা চলত সমানতালে।
টিভিতে রবীন্দ্রনাথ
বইমেলায় আসা টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাগুলোতে মুখ দেখানোর জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়তেন রবীন্দ্রনাথ। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে, হাতে গীতাঞ্জলি নিয়ে টিভির সামনে নিজের বইয়ের হালকা প্রচারণা চালাতেন তিনি।
নবীন লেখকদের নিয়ে অনুষ্ঠান ‘ঐ নতুন আসছে তেড়ে’-তে নিজের বই নিয়ে নানান বয়ান দিতেন।
মেলা শেষে মাথায় হাত
নানা চটকদার নামের বইয়ের ভিড়ে কঠিন নামের গীতাঞ্জলি খুব একটা চলত না।
৩০০ কপির মধ্যে বিক্রি হতো মোট চার কপি। এক কপি রবীন্দ্রনাথের নিজের কেনা, দুই কপি জোর করে বন্ধুদের দিয়ে কেনানো, আর এক কপি কার কেনা, তা রবীন্দ্রনাথ বের করতে পারতেন না। তবে নিশ্চয়ই কোনো তরুণী পাঠকের কেনা—এটা ভেবে সান্ত্বনা পেতেন রবি বাবু।
অতঃপর রবি বাবু
প্রথম বই দিয়ে সাড়া না পেয়ে রবীন্দ্রনাথ তখন হতাশ। লেখালেখির ভূত মাথা থেকে নামিয়ে আপন জমিদারির দিকে মনোযোগ দিতেন তিনি।
নোবেল পাওয়ার বদলে সফল জমিদার হিসেবে সুন্দর একটা গোল্ড মেডেল পেতেন অবশেষে।
রস আলো - ২০-০২-২০১২
বই প্রকাশ
গীতাঞ্জলি তো লেখা হলো। কিন্তু প্রকাশ করবে কে? বিরাট চিন্তায় পড়ে যেতেন রবীন্দ্রনাথ। বিভিন্ন প্রকাশকের কাছে গিয়েও খুব একটা পাত্তা পেতেন না তিনি। প্রকাশকেরা নাক-মুখ কুঁচকে বলতেন, ‘লম্বা দাড়ি রেখেছেন ভালো কথা। কিন্তু তার পরও আপনি তরুণ লেখক। কে কিনবে আপনার বই? সরি, আমি রিস্ক নিতে পারব না। আপনার বই প্রকাশ করা যাবে না।’
অগত্যা প্রকাশককে পকেট থেকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতেন রবি বাবু। বইমেলায় আসত ৩০০ কপি গীতাঞ্জলি।
বিজ্ঞাপন
নতুন লেখক, কেউ চেনে-টেনে না। কে কিনবে রবির বই? তাই পত্রিকায় রাবীন্দ্রিক ভাষায় বইয়ের বিজ্ঞাপন দিতেন রবীন্দ্রনাথ: ‘ওরে সবুজ, ওরে কাঁচা, এবারের পুস্তক মেলায় আসিয়াছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নতুন পুস্তিকা গীতাঞ্জলি। পুস্তকখানা ক্রয় করিবার আশ হইলে মেলার ভানুসিংহ প্রকাশনীর স্টলে খোঁজ করিবেন।’
ফেসবুকে প্রচারণা
ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথের একটি অ্যাকাউন্ট থাকত ‘ড্যাশিং রবি’ নামে। ওটা দিয়ে তুমুল প্রচারণা চালাতেন রবি বাবু। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে নিজের বইয়ের প্রচ্ছদের ছবি দিয়ে রাখতেন তিনি।
বই নিয়ে খুলতেন ফেসবুক পেজ, গ্রুপ ইত্যাদি। অন্যান্য ফেক অ্যাকাউন্ট থেকেও প্রচারণা চলত সমানতালে।
টিভিতে রবীন্দ্রনাথ
বইমেলায় আসা টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাগুলোতে মুখ দেখানোর জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়তেন রবীন্দ্রনাথ। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে, হাতে গীতাঞ্জলি নিয়ে টিভির সামনে নিজের বইয়ের হালকা প্রচারণা চালাতেন তিনি।
নবীন লেখকদের নিয়ে অনুষ্ঠান ‘ঐ নতুন আসছে তেড়ে’-তে নিজের বই নিয়ে নানান বয়ান দিতেন।
মেলা শেষে মাথায় হাত
নানা চটকদার নামের বইয়ের ভিড়ে কঠিন নামের গীতাঞ্জলি খুব একটা চলত না।
৩০০ কপির মধ্যে বিক্রি হতো মোট চার কপি। এক কপি রবীন্দ্রনাথের নিজের কেনা, দুই কপি জোর করে বন্ধুদের দিয়ে কেনানো, আর এক কপি কার কেনা, তা রবীন্দ্রনাথ বের করতে পারতেন না। তবে নিশ্চয়ই কোনো তরুণী পাঠকের কেনা—এটা ভেবে সান্ত্বনা পেতেন রবি বাবু।
অতঃপর রবি বাবু
প্রথম বই দিয়ে সাড়া না পেয়ে রবীন্দ্রনাথ তখন হতাশ। লেখালেখির ভূত মাথা থেকে নামিয়ে আপন জমিদারির দিকে মনোযোগ দিতেন তিনি।
নোবেল পাওয়ার বদলে সফল জমিদার হিসেবে সুন্দর একটা গোল্ড মেডেল পেতেন অবশেষে।
রস আলো - ২০-০২-২০১২