মঞ্চ:ফেসবুক। নীল আর সাদা রং মিলে কিছুটা স্নিগ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করবে। দৃশ্য এক: মঞ্চে ধীরপায়ে এল একটি মেয়ে। সে হলো মেয়ে ১। এরপর এল একটি ছেলে। সে হলো ছেলে ১। মঞ্চে লেখা এল: মেয়ে ১ ওয়ান্টস টু বি ইওর ফ্রেন্ড। ছেলেটি একসেপ্ট বাটন চাপল।
দৃশ্য দুই: মেয়ের স্ট্যাটাস: মন খারাপ (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: রোমান্টিক গান) কমেন্ট: ছেলে ১: কেন, কী হয়েছে? মেয়ে ১: আম্মু বকা দিয়েছে! ছেলে ১: আহা রে! কাঁদে না। কী করছিলা? মেয়ে ১: কচু! কিছুই করি নাই। এমনি বকা দিয়েছে। আমি ছোট তো! সবাই আমাকে বকা দেয়। সবাই পচা। ছেলে আর মেয়ে ধীরে ধীরে পর্দার আড়ালে (ইনবক্সে) চলে যাবে। দৃশ্য তিন: পর্দার আড়ালে (ইনবক্সে) নড়াচড়া দেখা যাবে। দৃশ্য চার: ছেলে আর মেয়ে একসঙ্গে আবার মঞ্চে আসবে। ছেলের স্ট্যাটাস: পাইলাম, উহারে পাইলাম। (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: লুতুপুতু রোমান্টিক গান) কমেন্ট: মেয়ে: ছেলে: মেয়ে: কাকে পাইলা? ছেলে: বলতেই হবে? মেয়ে: বুঝে নিলাম। ছেলে: তাই? হুহ। মেয়ে: তা নয়তো কী? ছেলে: :-* মেয়ে: যাহ! দুষ্টু। :p দর্শক হাততালি দেবে। মেয়ের স্ট্যাটাস: এত দিন কোথায় ছিলে? (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: রোমান্টিক মিউজিক) কমেন্ট: ছেলে: মেয়ে: ছেলে: তুমি খোঁজ নাওনি কেন? মেয়ে: অ্যাহ! আমার এত ঠ্যাকা পড়েছে! ছেলে: সব আমাকে করতে হবে? মেয়ে: জি, স্যার। আপনাকেই করতে হবে :p দর্শক হাততালি দেবে। ছেলে আর মেয়ে আবার পর্দার আড়ালে (ইনবক্স) চলে যাবে। দৃশ্য পাঁচ: সিম্বলিক শট ১: মঞ্চে এসে ছেলে ১ একঝাঁক পায়রা উড়িয়ে দেবেন আকাশে। পায়রাগুলো স্বপ্নের প্রতীক। সিম্বলিক শট ২: মঞ্চে মেয়ে পিস্তল নিয়ে এসে সব কটি পায়রা গুলি করে মেরে ফেলবে। তাঁর মুখে তখন স্ক্রূর হাসি। (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: ভায়োলিনের করুণ সুর)
দৃশ্য ছয়: ধীরে ধীরে মঞ্চে আসবে মেয়েটি। অপর পাশ থেকে আসবে ছেলে ২ (প্রথমবারের মতো)। একের সঙ্গে অপরের দেখা হলো। ছেলে ১ তখন পর্দার আড়ালে। ছেলে ২ অপলক নয়নে মেয়ের দিকে চেয়ে থাকবে। মেয়েটিও তাকিয়ে থাকবে। উভয়ের হূদয় একসঙ্গে খচাৎ করে উঠল। ছেলে ২-এর ফেসবুক স্ট্যাটাস: প্রথম দেখায় প্রেম! (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: বাঁশির মধুর সুর) কমেন্ট: মেয়ে: তাই নাকি! ছেলে ২: তাই তো মনে হচ্ছে! মেয়ে: তা কার প্রেমে পড়লেন? ছেলে ২: সে আশপাশেই আছে। মেয়ে: ছেলে ২: হারিয়েছি আমি তোমাতে। মেয়ে: দর্শক কপাল কুঁচকাবে। পর্দার আড়ালে (ইনবক্স) চলে যাবে ছেলে ২ ও মেয়ে।
দৃশ্য সাত: কিছুক্ষণ পর আবার মঞ্চে আসবে তারা। ছেলে ২-এর স্ট্যাটাস: ভালোবাসার প্রহরে মুখোমুখি দুজন। (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: রোমান্টিক রবীন্দ্রসংগীত) মেয়ে: ছেলে ২: মেয়ে: :p ছেলে২: জিব দেখাও কেন? মেয়ে: তোমাকে দেখাচ্ছি নাকি। ছেলে ২: আমি তো দেখে ফেললাম। পর্দার আড়াল থেকে ধীরে ধীরে আসবে ছেলে ১। এসে কমেন্ট করবে— ছেলে ১: কী হচ্ছে? ছেলে ২: প্রেম হচ্ছে! মেয়ে: নো কমেন্ট। (কিছুটা বিব্রত) মেয়ের স্ট্যাটাস: চাই তোমায় প্রতি নিঃশ্বাসে (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: গিটারের টুংটাং) কমেন্ট: ছেলে ২: মেয়ে: ছেলে ২: আমিও। মেয়ে: আমিও গো! ছেলে ১: বাহ! মেয়ে: ছেলে ১, কী সমস্যা তোমার? ছেলে ১: কোনো সমস্যা নাই। দেখলাম। (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: বাঁশি) দর্শক কপাল কুঁচকাবে। পর্দার আড়ালে চলে যাবে ছেলে ২ ও মেয়ে। ছেলে ১ তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
দৃশ্য আট: ছেলে ১ মঞ্চের কোণে একা একা বসে আছে। তার মনে তখন ঝড়। অন্যদিকে ছেলে ২ আর মেয়েটি মঞ্চের মাঝখানে নাচানাচি করছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে একটার পর একটা গান—‘তোমার বারিষ মাখা হাসি আমার...’ ‘উ লা লা লা। লক্ষ্মী সোনা চাঁদের কণা...আ আ আ...’ গান শেষ হলে পঞ্চম দৃশ্যে মারা যাওয়া পায়রা দিয়ে ছেলে ২ আর মেয়েটি লাঞ্চ সেরে ফেলবে। ছেলে ১ এসব দেখে আস্তে আস্তে মঞ্চ থেকে আড়ালে চলে যাবে। দর্শক তখন ঘৃনায় থু থু ফেলছে। সমাপ্ত
নাটকটির নাম হওয়া উচিত ছিলোঃ "কি করে এতো কুৎসিত হলো জন্তুগুলো"