১.
হিস্টলজিতে এক ম্যাডাম আছেন। বাড়ি সিলেট। তিনি আমাদের সাথে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন। তার শুদ্ধের নমুনা দেই কয়েকটা।
"এই, ওবায়দি আসো"
"এদিকে আসোনা কেনে? কথা কানে যায় না?"
"তুমি কিতা খাতা কমপ্লিট করে এনেছো নি?"
ম্যাডাম কালকে সাবধান করছিলেন আমাকে, "তোমারে নিয়া ডর আছে রে ভাই(ম্যাডাম প্রায়ই স্টুডেন্ট-দের ভাই ডেকে ফেলেন)। তুমি ক্লাসে ছিলা অনেক কম ছিলা। ফাকিবাজি করছো। ভালা করি পড়ে এসো"
আমি "ভালা করি" পড়ে গেলাম এনাটমি হার্ড পার্ট দিতে। আজকেই ছিলো প্রফ-এর শেষ দিন।
উড়া কথা আছে প্রফের শেষ দিন ফেইল করে সব চেয়ে বেশি। আমি বাড়তি সতর্কতা নিয়ে স্যারের মুখোমুখি হলাম। আজকে কোন ভুল করা যাবে না।
কিন্তু প্রথমেই করলাম ভুল। HIP BONE নিলাম। বাম সাইডেরটা ধরলাম ডান দিকে। স্যার আমার ধরা দেখে অবাক। হা করে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। আমিও স্যারের দিকে তাকিয়ে রইলাম হা করে। হা-তে হা-ক্ষয় টাইপ অবস্থা।
প্রায় এক মিনিট পরে খেয়াল করলাম। খাইছে! আমি তো বাম সাইড নিয়ে আসছি ডান দিকে। সাথে সাথে সাইড ঠিক করে স্যারের দিকে চেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিলাম।
স্যার বললেন, "আগে কি করছিলা? এরকম করলে তো জীবিত মানুষ মেরে ফেলবা"
আমি মনে মনে বললাম, "শুধু তাই না। মৃত মানুষকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবো"
এরপরে অবশ্য তেমন কোন ভুল হয়নি আর। নাহলে আমার আজকে খবর ছিলো।
ফাস্ট প্রফ শেষ। তিন মাস যাবত পরীক্ষা দিতে দিতে টায়ার্ড। এখন ১০/১২ দিন ব্রেক পেলাম। কি করবো ভেবেই পাচ্ছি না।
২.
প্রফ চলাকালীন সময়ে লেখালেখি চলছিলো বেশ।
আমার এটাই হয়। পরীক্ষা থাকলে দুনিয়ার সব ফাজলামো এসে ভর করে। আজকে ইচ্ছা ছিলো অনেকগুলো আইডিয়া নিয়ে মাইক্রসফটওয়ার্ডে গুতাগুতি করবো। কিন্তু ইচ্ছে হচ্ছে না। কিন্তু প্রফ চলার সময় প্রতিদিন ইচ্ছে হতো।
আজকে রস আলো-তে অনেকদিন পরে লেখা ছাপা হলো।
আশা করছি আগামী কয়েকমাস লিখে যাবো। অবশ্য আমার নিজের উপর আমার বিশ্বাস নেই। আলসেমী ধরে বসবে না এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। বরং অলস হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাটাই বেশি।
৩.
কালকে মায়ের অপারেশন। অপারেশন করবেন আমাদের গাইনোকলজিস্ট ডিপার্টেমেন্টের হ্যাড। ম্যাডাম এই উপমহাদেশের সেরা গাইনকলজিস্টদের একজন।
কালকে বলে দিয়েছেন "তুমি থাকবা OT তে। থার্ড ইয়ারে উঠেছো। অভ্যাস করতে হবে।"
আমি ভয় পাচ্ছি। ম্যাডাম উলটা পালটা প্রশ্ন করলে বিপদে পড়ে যাবো। ডাক্তারদের উপর কোন বিশ্বাস নেই। যেকোন মুহূর্তে প্রশ্ন ট্রশ্ন করে বিপদে ফেলে দেয়াটা তাদের হবির পর্যায়ে পড়ে।
আমাদের এক স্যারের প্রথম বাচ্চা হবার পর আমরা কয়েকজন প্ল্যান করেছিলাম একটা গিফট নিয়ে বাচ্চাকে দেখতে যাবো। এতে করে স্যারকে ভালো একটা তেল মারা হবে।
কিন্তু আমি বললাম, "ভালো কথা স্যারের বাচ্চাকে দেখতে যাচ্ছো। কিন্তু স্যার যে হুট করে ডেফিনিশন অব চাইল্ড বার্থ, মেকানিজম অব চাইল্ড বার্থ জিজ্ঞেস করবেন না তার নিশ্চয়তা কি?"
সবাই মাথা ঝাকালো।
যাই হোক, প্রথমবারের মতো OT তে গিয়ে দেখবো মায়ের অপারেশন। ভাবতেই কেমন জানি লাগছে।
যে গান শুনছিঃ বন্ধ জানালা - শিরোনামহীন
তারীখঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১
হিস্টলজিতে এক ম্যাডাম আছেন। বাড়ি সিলেট। তিনি আমাদের সাথে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন। তার শুদ্ধের নমুনা দেই কয়েকটা।
"এই, ওবায়দি আসো"
"এদিকে আসোনা কেনে? কথা কানে যায় না?"
"তুমি কিতা খাতা কমপ্লিট করে এনেছো নি?"
ম্যাডাম কালকে সাবধান করছিলেন আমাকে, "তোমারে নিয়া ডর আছে রে ভাই(ম্যাডাম প্রায়ই স্টুডেন্ট-দের ভাই ডেকে ফেলেন)। তুমি ক্লাসে ছিলা অনেক কম ছিলা। ফাকিবাজি করছো। ভালা করি পড়ে এসো"
আমি "ভালা করি" পড়ে গেলাম এনাটমি হার্ড পার্ট দিতে। আজকেই ছিলো প্রফ-এর শেষ দিন।
উড়া কথা আছে প্রফের শেষ দিন ফেইল করে সব চেয়ে বেশি। আমি বাড়তি সতর্কতা নিয়ে স্যারের মুখোমুখি হলাম। আজকে কোন ভুল করা যাবে না।
কিন্তু প্রথমেই করলাম ভুল। HIP BONE নিলাম। বাম সাইডেরটা ধরলাম ডান দিকে। স্যার আমার ধরা দেখে অবাক। হা করে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। আমিও স্যারের দিকে তাকিয়ে রইলাম হা করে। হা-তে হা-ক্ষয় টাইপ অবস্থা।
প্রায় এক মিনিট পরে খেয়াল করলাম। খাইছে! আমি তো বাম সাইড নিয়ে আসছি ডান দিকে। সাথে সাথে সাইড ঠিক করে স্যারের দিকে চেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিলাম।
স্যার বললেন, "আগে কি করছিলা? এরকম করলে তো জীবিত মানুষ মেরে ফেলবা"
আমি মনে মনে বললাম, "শুধু তাই না। মৃত মানুষকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবো"
এরপরে অবশ্য তেমন কোন ভুল হয়নি আর। নাহলে আমার আজকে খবর ছিলো।
ফাস্ট প্রফ শেষ। তিন মাস যাবত পরীক্ষা দিতে দিতে টায়ার্ড। এখন ১০/১২ দিন ব্রেক পেলাম। কি করবো ভেবেই পাচ্ছি না।
২.
প্রফ চলাকালীন সময়ে লেখালেখি চলছিলো বেশ।
আমার এটাই হয়। পরীক্ষা থাকলে দুনিয়ার সব ফাজলামো এসে ভর করে। আজকে ইচ্ছা ছিলো অনেকগুলো আইডিয়া নিয়ে মাইক্রসফটওয়ার্ডে গুতাগুতি করবো। কিন্তু ইচ্ছে হচ্ছে না। কিন্তু প্রফ চলার সময় প্রতিদিন ইচ্ছে হতো।
আজকে রস আলো-তে অনেকদিন পরে লেখা ছাপা হলো।
আশা করছি আগামী কয়েকমাস লিখে যাবো। অবশ্য আমার নিজের উপর আমার বিশ্বাস নেই। আলসেমী ধরে বসবে না এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। বরং অলস হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাটাই বেশি।
৩.
কালকে মায়ের অপারেশন। অপারেশন করবেন আমাদের গাইনোকলজিস্ট ডিপার্টেমেন্টের হ্যাড। ম্যাডাম এই উপমহাদেশের সেরা গাইনকলজিস্টদের একজন।
কালকে বলে দিয়েছেন "তুমি থাকবা OT তে। থার্ড ইয়ারে উঠেছো। অভ্যাস করতে হবে।"
আমি ভয় পাচ্ছি। ম্যাডাম উলটা পালটা প্রশ্ন করলে বিপদে পড়ে যাবো। ডাক্তারদের উপর কোন বিশ্বাস নেই। যেকোন মুহূর্তে প্রশ্ন ট্রশ্ন করে বিপদে ফেলে দেয়াটা তাদের হবির পর্যায়ে পড়ে।
আমাদের এক স্যারের প্রথম বাচ্চা হবার পর আমরা কয়েকজন প্ল্যান করেছিলাম একটা গিফট নিয়ে বাচ্চাকে দেখতে যাবো। এতে করে স্যারকে ভালো একটা তেল মারা হবে।
কিন্তু আমি বললাম, "ভালো কথা স্যারের বাচ্চাকে দেখতে যাচ্ছো। কিন্তু স্যার যে হুট করে ডেফিনিশন অব চাইল্ড বার্থ, মেকানিজম অব চাইল্ড বার্থ জিজ্ঞেস করবেন না তার নিশ্চয়তা কি?"
সবাই মাথা ঝাকালো।
যাই হোক, প্রথমবারের মতো OT তে গিয়ে দেখবো মায়ের অপারেশন। ভাবতেই কেমন জানি লাগছে।
যে গান শুনছিঃ বন্ধ জানালা - শিরোনামহীন
আর একবার তোমাদের লাল নীল রঙ আনন্দে
একলা রাস্তায় এক চিলতে রুদ্দুর।
সারাবেলা বন্ধ জানালা।
একলা রাস্তায় এক চিলতে রুদ্দুর।
সারাবেলা বন্ধ জানালা।
তারীখঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।