১।
প্রথম প্রেমের ঘটনা বেশ আগের। আমি তখন পড়ি ক্লাস টু তে। প্রেমটা হয়েছিলো আমার এক আপুর সাথে। আপু তখন পড়তেন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে। প্রথম দিকে প্রেমটা ছিলো এক তরফা। শুধু আপুই আমার প্রেমে পড়েছিলেন। আমি প্রায় প্রতিদিনই আপুর বাসায় যেতাম। তিনি আমাকে ডাকতেন “পিচ্চি ডারলিং”। আমাকে দেখলেই রোমান্টিক গলায় বলতেন “কিরে পিচ্চি তুই বড় হস না কেনো? তুই বড় না হলে আমি বিয়ে করবো কাকে? প্লিজ লক্ষি সোনা বড় হ”
আপুর এই গদগদ প্রেম দেখে অতি অল্প বয়সে আমিও তার প্রেমে পড়ে গেলাম। আপুর বাসায় যাতায়ত বেড়ে গেলো। মোটা ফ্রেমের চশমা পরে আপুর আশে পাশে ঘুর ঘুর করার মাঝে কি মজা পেতাম ঐ বয়সে কে জানে! আপুও আমাকে দেখলেই গাল টাল টিপে
দিতেন। আমার ভালো লাগতো। আপুর মা ছিলেন এক কাঠি বেশী সরেস। তিনি আমাকে ডাকতেন “জামাই বাবা”। আমার বয়স কম ছিলো বলেই হয়তো বুঝতে পারিনি আপু ছিলেন অনেক বড় ছলনাময়ী। আমার সাথে প্রেম চলা অবস্থায়ই তিনি আরেকজনকে বিয়ে করে ফেলেন। এভাবে অতি অল্প বয়সেই ছ্যাকা খেয়ে বসলাম।
অবশ্য আমি তার সাথে পরকিয়াও করেছি। আমাকে দেখিয়ে আপু তার হাজব্যান্ডকে বলতেন, “এ আমার প্রথম স্বামী অর্থাৎ তোমার সতীন”
২।
দ্বিতীয় প্রেমের কাহীনি ক্লাস নাইনে উঠে। এক মেয়ের সাথে বেশ ভালো ভাব জমে গেলো। নোট দেয়া নেয়া, চোখা চোখি, আড়ালে কথা বলাবলি সব মিলিয়ে দারুন চলছিলো সময়টা। আমি বেশ মুডে ছিলাম। তখন হাতে হাতে মোবাইলের যুগ আসে নি। প্রায় রাতেই পড়া বোঝার অজুহাতে মেয়েটা বাসার ফোন থেকে আমাকে ফোন দিতো। ফুসুর ফাসুর করে অনেক কথা হতো। আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে মেয়েটার সাথে আমার প্রেম হয়ে যাবে। কিন্তু বিপদ ঘটে গেলো এর মাঝে।
একদিন মেয়েটা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে কিছুটা একটা দেখছিলো। আমিও ব্যাপারটা উপভোগ করছিলাম। একটা মেয়ে আমাকে দেখছে, দেখুক। এতো সৌভাগ্য ক'জনের হয়। কিন্তু মেয়ের মনে ছিলো অন্যটা। সে কিছুক্ষন আমার মুখের দিকে তাকি হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো- “এই! তোমার দাড়ি ওঠে নাই!” হঠাৎ এরকম কথা শুনে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।
আমি গালে হাত বুলালাম। অনেক খোজেও কোন দাড়ির অস্তিত্ব পেলাম না। জোর করে মুখে হাসি এনে বললাম, “দাড়ি নাই! তাই নাকি? উঠবে উঠবে। একদিন নিশ্চয়ই দাড়ি উঠবে”
কিন্তু মেয়ে আমার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে হন হন করে হেটে চলে গেলো।
আহা! সেদিন যদি আমার দাড়ি উঠতো!
৩।
এটা ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের ঘটনা। বাসে করে ঢাকা থেকে সিলেট আসছি। তখনও আমার কোন প্রেম হয়নি। বিধাতা এই বান্দার দিকে চোখ তুলে তাকালেন। আমার সিটের পাশে বসলো এক অপূর্ব সুন্দরী রমনী। আমি প্রথম দেখেই প্রেমে পড়ে গেলাম। অনেকটা “বাজিলো বুকে সুখের মতোন ব্যাথা” টাইপ অবস্থা।মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য দিল আকুপাকু করা শুরু করলো। বিধাতা আবার
আমাকে করুনা করলেন। মেয়েটাই কথা বলা শুরু করলো। “ভাইয়্যা আপনি নামবেন কোথায়? সিলেট? ওয়াও। কি দারুন। আমিও সিলেট নামবো। বেশ লম্বা পথ। গল্প করে করে যাওয়া যাবে। আপনার নামটা বলবেন ভাইয়্যা?.....”
আমি অতি উৎসাহের সাথে কথা বার্তা চালিয়ে যেতে লাগলাম। অবাক ব্যাপার হলো এক ঘন্টার ভেতর মেয়েটার সাথে আমার প্রেম হয়ে গেলো। সাধারণ প্রেম না। একেবারে “জানটুশ” “প্রানটুশ” টাইপ প্রেম। একে অপরকে অনেক কথা বললাম। কথা দিলাম। সারা জীবন এক সাথে থাকারও প্ল্যান করে ফেললাম।
কিভাবে যে তিন ঘন্টা কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না। নামার আগে মেয়েটার মোবাইল নম্বর চাইলাম। মেয়েটা সুন্দর ভাবে তার মোবাইল নম্বর দিয়ে চলে গেলো।
আমি বাসায় আসলাম। মনে তখন প্রথম প্রেমে পড়ার আনন্দ। আহা! রাতে আয়েশ করে মেয়েটাকে ফোন করলাম। কিন্তু একি! ওপাশ থেকে কঠিন পুরুষের গলা- “ঐ বান্দর! কি চাস তুই?” আমি ভয়ে ফোন কেটে দিলাম। আমি নম্বর চেক করে দেখলাম ঠিকই
আছে। তারপর সাহস সঞ্চয় করে আবার দিলাম। আবার ঝাঝালো কন্ঠ। “ঐ গাধা। আবার ফোন?”
আমি আবার ফোন কেটে দিলাম।
এখনো মাঝে মাঝে নম্বরটাতে কল করতে ইচ্ছ হয়। কিন্তু বিধাতা আমাকে সাহস দেন না।
** বাস্তবতার সাথে এই লেখার কোনরকম মিল নাই।
লেখাটি আজকের বিচ্ছুতে প্রকাশিত
প্রথম প্রেমের ঘটনা বেশ আগের। আমি তখন পড়ি ক্লাস টু তে। প্রেমটা হয়েছিলো আমার এক আপুর সাথে। আপু তখন পড়তেন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে। প্রথম দিকে প্রেমটা ছিলো এক তরফা। শুধু আপুই আমার প্রেমে পড়েছিলেন। আমি প্রায় প্রতিদিনই আপুর বাসায় যেতাম। তিনি আমাকে ডাকতেন “পিচ্চি ডারলিং”। আমাকে দেখলেই রোমান্টিক গলায় বলতেন “কিরে পিচ্চি তুই বড় হস না কেনো? তুই বড় না হলে আমি বিয়ে করবো কাকে? প্লিজ লক্ষি সোনা বড় হ”
আপুর এই গদগদ প্রেম দেখে অতি অল্প বয়সে আমিও তার প্রেমে পড়ে গেলাম। আপুর বাসায় যাতায়ত বেড়ে গেলো। মোটা ফ্রেমের চশমা পরে আপুর আশে পাশে ঘুর ঘুর করার মাঝে কি মজা পেতাম ঐ বয়সে কে জানে! আপুও আমাকে দেখলেই গাল টাল টিপে
দিতেন। আমার ভালো লাগতো। আপুর মা ছিলেন এক কাঠি বেশী সরেস। তিনি আমাকে ডাকতেন “জামাই বাবা”। আমার বয়স কম ছিলো বলেই হয়তো বুঝতে পারিনি আপু ছিলেন অনেক বড় ছলনাময়ী। আমার সাথে প্রেম চলা অবস্থায়ই তিনি আরেকজনকে বিয়ে করে ফেলেন। এভাবে অতি অল্প বয়সেই ছ্যাকা খেয়ে বসলাম।
অবশ্য আমি তার সাথে পরকিয়াও করেছি। আমাকে দেখিয়ে আপু তার হাজব্যান্ডকে বলতেন, “এ আমার প্রথম স্বামী অর্থাৎ তোমার সতীন”
২।
দ্বিতীয় প্রেমের কাহীনি ক্লাস নাইনে উঠে। এক মেয়ের সাথে বেশ ভালো ভাব জমে গেলো। নোট দেয়া নেয়া, চোখা চোখি, আড়ালে কথা বলাবলি সব মিলিয়ে দারুন চলছিলো সময়টা। আমি বেশ মুডে ছিলাম। তখন হাতে হাতে মোবাইলের যুগ আসে নি। প্রায় রাতেই পড়া বোঝার অজুহাতে মেয়েটা বাসার ফোন থেকে আমাকে ফোন দিতো। ফুসুর ফাসুর করে অনেক কথা হতো। আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে মেয়েটার সাথে আমার প্রেম হয়ে যাবে। কিন্তু বিপদ ঘটে গেলো এর মাঝে।
একদিন মেয়েটা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে কিছুটা একটা দেখছিলো। আমিও ব্যাপারটা উপভোগ করছিলাম। একটা মেয়ে আমাকে দেখছে, দেখুক। এতো সৌভাগ্য ক'জনের হয়। কিন্তু মেয়ের মনে ছিলো অন্যটা। সে কিছুক্ষন আমার মুখের দিকে তাকি হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো- “এই! তোমার দাড়ি ওঠে নাই!” হঠাৎ এরকম কথা শুনে আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।
আমি গালে হাত বুলালাম। অনেক খোজেও কোন দাড়ির অস্তিত্ব পেলাম না। জোর করে মুখে হাসি এনে বললাম, “দাড়ি নাই! তাই নাকি? উঠবে উঠবে। একদিন নিশ্চয়ই দাড়ি উঠবে”
কিন্তু মেয়ে আমার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে হন হন করে হেটে চলে গেলো।
আহা! সেদিন যদি আমার দাড়ি উঠতো!
৩।
এটা ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের ঘটনা। বাসে করে ঢাকা থেকে সিলেট আসছি। তখনও আমার কোন প্রেম হয়নি। বিধাতা এই বান্দার দিকে চোখ তুলে তাকালেন। আমার সিটের পাশে বসলো এক অপূর্ব সুন্দরী রমনী। আমি প্রথম দেখেই প্রেমে পড়ে গেলাম। অনেকটা “বাজিলো বুকে সুখের মতোন ব্যাথা” টাইপ অবস্থা।মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য দিল আকুপাকু করা শুরু করলো। বিধাতা আবার
আমাকে করুনা করলেন। মেয়েটাই কথা বলা শুরু করলো। “ভাইয়্যা আপনি নামবেন কোথায়? সিলেট? ওয়াও। কি দারুন। আমিও সিলেট নামবো। বেশ লম্বা পথ। গল্প করে করে যাওয়া যাবে। আপনার নামটা বলবেন ভাইয়্যা?.....”
আমি অতি উৎসাহের সাথে কথা বার্তা চালিয়ে যেতে লাগলাম। অবাক ব্যাপার হলো এক ঘন্টার ভেতর মেয়েটার সাথে আমার প্রেম হয়ে গেলো। সাধারণ প্রেম না। একেবারে “জানটুশ” “প্রানটুশ” টাইপ প্রেম। একে অপরকে অনেক কথা বললাম। কথা দিলাম। সারা জীবন এক সাথে থাকারও প্ল্যান করে ফেললাম।
কিভাবে যে তিন ঘন্টা কেটে গেলো বুঝতেই পারলাম না। নামার আগে মেয়েটার মোবাইল নম্বর চাইলাম। মেয়েটা সুন্দর ভাবে তার মোবাইল নম্বর দিয়ে চলে গেলো।
আমি বাসায় আসলাম। মনে তখন প্রথম প্রেমে পড়ার আনন্দ। আহা! রাতে আয়েশ করে মেয়েটাকে ফোন করলাম। কিন্তু একি! ওপাশ থেকে কঠিন পুরুষের গলা- “ঐ বান্দর! কি চাস তুই?” আমি ভয়ে ফোন কেটে দিলাম। আমি নম্বর চেক করে দেখলাম ঠিকই
আছে। তারপর সাহস সঞ্চয় করে আবার দিলাম। আবার ঝাঝালো কন্ঠ। “ঐ গাধা। আবার ফোন?”
আমি আবার ফোন কেটে দিলাম।
এখনো মাঝে মাঝে নম্বরটাতে কল করতে ইচ্ছ হয়। কিন্তু বিধাতা আমাকে সাহস দেন না।
** বাস্তবতার সাথে এই লেখার কোনরকম মিল নাই।
লেখাটি আজকের বিচ্ছুতে প্রকাশিত
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।