আমাদের পাড়ায় একটা প্রচলিত গুজব আছে। আমাকে ধরে "সাইজ" করলে নাকি পাড়ার সব বড় ভাই বোনদের "কুকির্তী" ফাস হয়ে যাবে।
গুজবটা একেবারে মিথ্যা না। পাড়ার বড় ভাই বোনদের প্রেম পত্র আনা নেওয়া করার দায়ীত্বটা ছিলো আমার। তখন মোবাইল আর ফেসবুকের জমানা ছিলো না। প্রেম পত্রই ছিলো ভরষা।
পিচ্চিকালে আমার চেহারায় সম্ভবত একটা "গুটুল মুটুল" ভাব ছিলো। উস্কোখোস্ক চুল আর মোটা ফ্রেমের চশমা পরে ঘুর ঘুর করতাম। পাড়ার বড় বোনদের মায়েরা অজ্ঞাত কারণে আমাকে বেশ পছন্দ করতেন। যার ফলে তাদের মেয়েদের বেড রুম পর্যন্ত ঢুকে যেতে পারতাম সহযেই। তাই আমার জন্য চিঠি চালাচালি করা খুব একটা কঠিক কাজ ছিলো না।
একদিনের ঘটনা। পাড়ার এক বড় ভাই আমার পকেটে একটা চিঠি গুজে দিলেন। সাথে কয়েকটা চকলেটও দিয়ে দিলেন। আমি যায়গা মতো "মাল ডেলিভারী" দিতে চলে গেলাম মেয়ের বাসায়। ঢুকে গেলাম সোজা মেয়ের বেড রুমে। গিয়ে বললাম, "আপু প্রস্রাব করবো! বাথরুমটা কোন দিকে?" আপু আমাকে বাথরুম দেখিয়ে দিলেন।
আমি বাথরুমে ঠিকঠাকমতো প্রস্রাব করলাম। দুর্ঘটনা ঘটলো প্যান্টের জিপার লাগাতে গিয়ে। জিপার "জিনিষে" আটকে গেলো। জিনিষে জিপার আটকে যাওয়া মোটামোটি ভয়াবহ একটা ব্যাপার। ভুক্তভোগি মাত্রই সেটা জানেন। যাই হোক দুর্ঘটনা ঘটার পর আমি হাউমাউ করে চিৎকার শুরু করলাম। আমার চিৎকার শুনে আপু ছুটে আসলেন। আমার অবস্থা দেখে কিছুক্ষন হা করে তাকিয়ে জিনিষ আর জিপার ধরে টানাটানি শুরু করলেন। কাজের কাজ কিছুই হলো না। উলটা জিপার জিনিষের সাথে আরো শক্ত হয়ে লেগে গেলো।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেন মেয়ের মা। তিনি কিছুক্ষন টানাটানি করার জিনিষ ছুটলো। কিন্তু ততক্ষনে ঘটে গেছে আরেক ঘটনা। তিনি জিনিষ ছুটাতে গিয়ে প্যান্টের পকেটে রাখা চিঠি টা আবিষ্কার করে ফেললেন। আমি তখন জিনিষ ছুটার আনন্দে আর আসন্ন ভয়াবহ পরিস্থিতির আশংকায় দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলাম।
পরে শুনেছিলাম অনেকদিন ঐ আপুর ঘরের বাইরে যাওয়া বন্ধ ছিলো। ঐ ঘটনার সাথে সাথে আমার বর্নাঢ্য চিঠি চালাচালি ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটে।
যাই হোক, দির্ঘ দিন চিঠি আদানপ্রদান করার ফজিলত সরুপ আমি খুবই অল্প বয়সে বেশ পেকে গিয়েছিলাম। প্রেমের বয়স না হলেও প্রেম ট্রেম বেশ ভালোই বুঝতাম। আমার এক ফুপাতো বোন প্রায়ই আমাদের বাসায় বেড়াতে আসতো। আমি তার সাথে একটা প্রেম প্রেম ভাব নিয়ে ঘুরতাম।
বলে রাখি, পিচ্চি থাকার সময় আমার মা আমাকে গোসল করিয়ে দিতেন। এবং গোসল করার সময় থাকতাম পুরা দিগম্বর।
একদিন মা আমাকে গোসল করিয়ে দিচ্ছেন। আমি যথারীতি ন্যাংটা। এমন সময় হাজির হলো আমার ফুফাতো বোন। কিছুক্ষন আমার দিকে হা করে চেয়ে থেকে চলে গেলো। আমি তখনও বুঝিনি ফাজিল মেয়েটার মাথায় কি ভয়াবহ শয়তানি ছিলো।
ঐ মেয়ে পরে যাকেই পেয়েছে তাকে বলে বেড়িয়েছে "আমি রাজির 'ঐটা' দেখে ফেলেছি। হা হা" তারপর হাত দিয়ে দেখিয়ে বলতো, "এতো বড়!"
এরকম বজ্জাত মেয়ের সাথে আর যাই হোক প্রেম করা যায় না। তাই প্রথম প্রেমেই ছ্যাকা খেলাম।
বজ্জাতটা এখন দেশের বাইরে থেকে। গত নভেম্বরে আমার ২১৮ তম জন্মদিনে ওই মেয়ে আমার বাসায় এসেছিলো। কথার ফাকে আমাকে অবাক করে দিয়ে একবার বলেছিলো, "এই! তোর জিনিষ এখনো এতো বড় নাকি রে?"।
এটাই সম্ভবত এডাম টিজিং।
(চলবে)
আগের পর্বঃ বিয়ে বিষয়ে আমার প্রাথমিক জ্ঞান।
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।