১
আজকাল মাজেদা খালার উৎপাত বেশ বেড়ে গেছে।
যখন তখন ফোন করেন। হিমুদের বিরক্ত হতে নেই। এটা আমার বাবার দেয়া উপদেশ গুলোর একটি। উপদেশ নং ১৫৭। তিনি বলে গেছেন, "বিরক্তি মানুষের সহজাত প্রবৃতিগুলার একটি। কিন্তু বাবা হিমালয়, মনে রাখিবে, তুমি হিমু। তোমাকে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিগুলো হইতে মুক্ত থাকিতে হইবে। কোন রকমেই বিরক্ত হওয়া চলিবে না।"
আমি বাবার আদেশ অমান্য করে মাজেদা খালার ফোনে বিরক্ত হয়ে ফোন বন্ধ করে রেখে দিলাম। তারপরেও নিস্তার নেই। ফেসবুকে ঢুকেই দেখি অনেক গুলা নোটিফিকেশন। খালা আমার ওয়ালে অসংখ্যবার চিকা মেরেছেন। একই কথা বার বার লেখাঃ "বাবা হিমু! তুই torit গতিতে আমার বাসায় চলে আয়। তোকে আমার খুবই দরকার। তোর পায়ে পড়ি, তুই তাড়াতাড়ি আয়" খালা আজকাল অভ্র দিয়ে লেখালেখি করছেন। "ৎঃ লিখতে পারেন না বলে "তড়িৎ" শব্দটা এড়িয়ে গেছেন। লিখেছেন "torit"
মাতৃশ্রেনির কেউ "পায়ে পড়ি" বলে কিছু বললে সেটা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। আমিও এড়াতে পারলাম না। আমি torit গতিতে মাজেদা খালার বাসায় উপস্থিত হলাম।
বাসায় ঢুকেই একটা ধাক্কার মতো খেলাম। সোফায় এক দাড়িওয়ালা মাওলানা বসে আছেন। তার সামনে মাজেদা খালা। আমি মাওলানা সাহেবকে সালাম দিলামঃ "-আপনার উপর শান্তি বর্ষিতো হোক মাওলানা সাহেব"
মাওলানা একটু হকচকিয়ে গেলেন। বাংলায় সালাম পেলে তার উত্তর কোন ভাষায় দিতে হয় তা তিনি সম্ভবত বুঝে উঠতে পারছেন না।
খালা আমার দিকে একটু চোখ রাঙ্গিয়ে তাকিয়ে ইশারায় বসতে বললেন। আমি বাধ্য ছেলের মতো বসে পড়লাম। খালা আমাকে দাড়িওয়ালা মাওলানা সাহেবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।
ইনি মাওলানা গোলাম আজম। সাচ্চা মুসলিম ব্যাক্তি। একাত্তর সহ বিভিন্ন ইস্যুতে তার জিহাদী ভুমিকা ব্যাপক। খালু সাহেব তার পরিচিত। কি একটা জরুরী ব্যাপারে আমার সাথে তার কথা আছে।
খালা আমাকে বললেন "হিমু! তুই মাওলানা সাহেবের সাথে কথা বল, আমি চা বানিয়ে আনি"
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম।
খালা চলে গেলেন।
মাওলানা সাহেব হালকা কাশি দিয়ে কথা বলা শুরু করলেন।
- আপনিই তাহলে হিমু!
- হু
- শোনেন হিমু সাহেব, আমার কয়েকজন শিষ্য বর্তমানে রিমান্ডে আছে, পেপারে নিশ্চয়ই তাদের নাম পড়েছেন! নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদি, কাদের মোল্লা, কামরুজ্জামান।
- হুজুর, আমি পত্রিকা টত্রিকা পড়ি না।
- থাক। পড়ার দরকার নেই। আজকাল পত্রিকাগুলো খুবই বাজে হয়ে গেছে। সংগ্রাম আর নয়া দিগন্ত ছাড়া আর সব পত্রিকাই চালায় ইহুদি নাসারাদের দোসররা।
- হু।
- তো যা বলছিলাম! হুমায়ুন আহমেদ নামক এক লেখকের "হিমু রিমান্ডে" বই পড়ে আমরা জেনেছি, আপনি নাকি একবার রিমান্ড থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছিলেন!
- আমি মধুর ভঙ্গিতে হাসলাম।
- আপনার কাছে এসেছি আপনি যাতে আমার ৫ শিষ্যের রিমান্ড থেকে পালিয়ে আসার ব্যাপারে সাহাজ্য করেন। যেহেতু এই লাইনে আপনার অভিজ্ঞতা আছে ভালোই।
মাওলানা সাহেব এবার গলাটা নিচে নামিয়ে আনলেন।
- "আপনাকে খুশি করে দেওয়া হবে, ডাইরেক্ট পেট্রো ডলার।" এই বলে তিনি আমাকে একটা চোখ টিপি দিলেন।
আমিও এক চোখ বন্ধ করে চোখ টিপি দেওয়ার চেস্টা করলাম। কিন্তু আমার দুই চোখই বন্ধ হয়ে গেলো। ট্রাইজেমিনাল নার্ভ নাকি চোখ টিপি দিতে সাহায্য করে। আমার সম্ভবত এই নার্ভ-এ সমস্যা। চোখ টিপি দিতে পারি না।
মাওলানা সাব আমাকে মগবাজারের একটা ঠিকানা ধরিয়ে দিলেন।
(চলবে)
আজকাল মাজেদা খালার উৎপাত বেশ বেড়ে গেছে।
যখন তখন ফোন করেন। হিমুদের বিরক্ত হতে নেই। এটা আমার বাবার দেয়া উপদেশ গুলোর একটি। উপদেশ নং ১৫৭। তিনি বলে গেছেন, "বিরক্তি মানুষের সহজাত প্রবৃতিগুলার একটি। কিন্তু বাবা হিমালয়, মনে রাখিবে, তুমি হিমু। তোমাকে মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিগুলো হইতে মুক্ত থাকিতে হইবে। কোন রকমেই বিরক্ত হওয়া চলিবে না।"
আমি বাবার আদেশ অমান্য করে মাজেদা খালার ফোনে বিরক্ত হয়ে ফোন বন্ধ করে রেখে দিলাম। তারপরেও নিস্তার নেই। ফেসবুকে ঢুকেই দেখি অনেক গুলা নোটিফিকেশন। খালা আমার ওয়ালে অসংখ্যবার চিকা মেরেছেন। একই কথা বার বার লেখাঃ "বাবা হিমু! তুই torit গতিতে আমার বাসায় চলে আয়। তোকে আমার খুবই দরকার। তোর পায়ে পড়ি, তুই তাড়াতাড়ি আয়" খালা আজকাল অভ্র দিয়ে লেখালেখি করছেন। "ৎঃ লিখতে পারেন না বলে "তড়িৎ" শব্দটা এড়িয়ে গেছেন। লিখেছেন "torit"
মাতৃশ্রেনির কেউ "পায়ে পড়ি" বলে কিছু বললে সেটা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। আমিও এড়াতে পারলাম না। আমি torit গতিতে মাজেদা খালার বাসায় উপস্থিত হলাম।
বাসায় ঢুকেই একটা ধাক্কার মতো খেলাম। সোফায় এক দাড়িওয়ালা মাওলানা বসে আছেন। তার সামনে মাজেদা খালা। আমি মাওলানা সাহেবকে সালাম দিলামঃ "-আপনার উপর শান্তি বর্ষিতো হোক মাওলানা সাহেব"
মাওলানা একটু হকচকিয়ে গেলেন। বাংলায় সালাম পেলে তার উত্তর কোন ভাষায় দিতে হয় তা তিনি সম্ভবত বুঝে উঠতে পারছেন না।
খালা আমার দিকে একটু চোখ রাঙ্গিয়ে তাকিয়ে ইশারায় বসতে বললেন। আমি বাধ্য ছেলের মতো বসে পড়লাম। খালা আমাকে দাড়িওয়ালা মাওলানা সাহেবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।
ইনি মাওলানা গোলাম আজম। সাচ্চা মুসলিম ব্যাক্তি। একাত্তর সহ বিভিন্ন ইস্যুতে তার জিহাদী ভুমিকা ব্যাপক। খালু সাহেব তার পরিচিত। কি একটা জরুরী ব্যাপারে আমার সাথে তার কথা আছে।
খালা আমাকে বললেন "হিমু! তুই মাওলানা সাহেবের সাথে কথা বল, আমি চা বানিয়ে আনি"
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম।
খালা চলে গেলেন।
মাওলানা সাহেব হালকা কাশি দিয়ে কথা বলা শুরু করলেন।
- আপনিই তাহলে হিমু!
- হু
- শোনেন হিমু সাহেব, আমার কয়েকজন শিষ্য বর্তমানে রিমান্ডে আছে, পেপারে নিশ্চয়ই তাদের নাম পড়েছেন! নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদি, কাদের মোল্লা, কামরুজ্জামান।
- হুজুর, আমি পত্রিকা টত্রিকা পড়ি না।
- থাক। পড়ার দরকার নেই। আজকাল পত্রিকাগুলো খুবই বাজে হয়ে গেছে। সংগ্রাম আর নয়া দিগন্ত ছাড়া আর সব পত্রিকাই চালায় ইহুদি নাসারাদের দোসররা।
- হু।
- তো যা বলছিলাম! হুমায়ুন আহমেদ নামক এক লেখকের "হিমু রিমান্ডে" বই পড়ে আমরা জেনেছি, আপনি নাকি একবার রিমান্ড থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছিলেন!
- আমি মধুর ভঙ্গিতে হাসলাম।
- আপনার কাছে এসেছি আপনি যাতে আমার ৫ শিষ্যের রিমান্ড থেকে পালিয়ে আসার ব্যাপারে সাহাজ্য করেন। যেহেতু এই লাইনে আপনার অভিজ্ঞতা আছে ভালোই।
মাওলানা সাহেব এবার গলাটা নিচে নামিয়ে আনলেন।
- "আপনাকে খুশি করে দেওয়া হবে, ডাইরেক্ট পেট্রো ডলার।" এই বলে তিনি আমাকে একটা চোখ টিপি দিলেন।
আমিও এক চোখ বন্ধ করে চোখ টিপি দেওয়ার চেস্টা করলাম। কিন্তু আমার দুই চোখই বন্ধ হয়ে গেলো। ট্রাইজেমিনাল নার্ভ নাকি চোখ টিপি দিতে সাহায্য করে। আমার সম্ভবত এই নার্ভ-এ সমস্যা। চোখ টিপি দিতে পারি না।
মাওলানা সাব আমাকে মগবাজারের একটা ঠিকানা ধরিয়ে দিলেন।
(চলবে)
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
পিসি ইউজাররা উপরের(ফেইসবুক কমেন্ট) অথবা নিচের যেকোনো বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর মোবাইল ব্যবহারকারীরা যে বক্সটি দেখা যাচ্ছে সেটিতে কমেন্ট করুন।